শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে শাহবাগ ছাড়ল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

প্রকাশঃ ২০২২-০৪-০৩ - ০২:২৩

ঢাকা অফিস :

ঢাকার শাহবাগে টানা ১৪ দিন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে অবশেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আশ্বাসে শাহবাগ ছেড়লেন প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য পরিচালিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

শনিবার বিকালে শিক্ষামন্ত্রী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক আরিফুর রহমান অপুকে ফোন করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।

এরপর সংবাদ মাধ্যমের সামনে ঈদের আগেই দাবি পূরণের আশা রেখে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা শাহবাগ ছাড়েন।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দেড় হাজারের বেশি বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষক-কর্মচারী গত ২০ মার্চ সকাল থেকে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

অপু বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আমাদের দাবির বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যৌক্তিক যা কিছু করণীয়, তা পূরণে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।

“তার কথা বিশ্বাস করে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করলাম। আশা করি, ঈদের আগেই আমরা আশানুরূপ ফল পাব।”

এর আগেও একই দাবিতে বেশ কয়েকবার আন্দোলন হয়েছে। ২০২১ সালে এমপিওভুক্তিসহ ১১ দফা দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচির দিয়েছিলেন শিক্ষকরা, যা পুলিশি বাধায় এগোয়নি।

এবার এমপিভুক্তি আদায়ে গরমের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি সময় টানা আন্দোলন করেন তারা। তাদের অনেকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হন।

সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এসব বিশেষায়িত স্কুল।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে কিছু স্কুলের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেলেও বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষক সেই সুবিধা পান না। বিত্তশালী ব্যক্তিদের সহায়তা ও অনুদানে চলে এসব প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষক সমিতির নেতারা জানান, বেসরকারি উদ্যোগকে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা করার লক্ষ্যে সরকার ‘প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা-২০০৯’ প্রণয়ন করে।

এছাড়া ২০১৯ সালে প্রতিবন্ধীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে আরও দুটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) সম্পর্কিত সমন্বিত/বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯’ এবং ‘নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী (এনডিডি) ব্যতীত প্রতিবন্ধী সম্পর্কিত সমন্বিত/বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯’- এ দুটি নীতিমালা অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে।

অপু জানান, দেশে এক হাজার ৭২৬টি প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রায় ৬০-৭০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী জড়িত, প্রায় ছয় লাখ শিক্ষার্থী এসব বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।

তার ভাষ্য, নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন করেও এসব বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি পাচ্ছে না।