সুন্দরবনে বাড়ছে পর্যটকদের ভীড়

প্রকাশঃ ২০২৩-০৯-০২ - ১৫:১২

 নজর কারছে ঝুলন্ত ব্রীজসহ নানা স্থাপনা

বাগেরহাট প্রতিনিধি : নিষেধাজ্ঞা শেষে খুলে দেওয়ার প্রথম দিনে পর্যটকদের ঢল নেমেছে বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবনে। এর মধ্যে খুলে দেওয়ার প্রথম দিনই (০১ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে করমজলে এসেছেন ৪শ ৯জন পর্যটক। এছাড়া পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সুন্দরবনে তৈরী করা হয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ, তথ্য কেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা। তবে ভালো মানের হোটেল-মোটেল না থাকায় বিরম্বনায় পরতে হচ্ছে পর্যটকদের।
সরোজমিনে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সুন্দরবন খুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই সুন্দরবনে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। ছোট ছোট লাইটার বোট, ট্রলার ও লঞ্চে করে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা ভীড় করছে করমজলে। সেই সাথে সুন্দরবনকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে তৈরী করা হয়েছে ঝুলন্ত ব্রীজ, তথ্য কেন্দ্র, ফুট ট্রেইলার, ওয়াচ টাওয়ার ও প্রসস্ত রাস্তাসহ নান্দনিক সব স্থাপনা। এছাড়া সুন্দরবনের আলিবান্দা ও চাঁদপাই রেঞ্জে আন্ধারমানিকে তৈরী করা হয়েছে নতুন দুটি পর্যটন স্পট। এছাড়া ঢেলে সাজানো হয়েছে সুন্দরবনের অন্যান্য পর্যটন স্পট গুলো। তবে সুন্দরবনে ঘুরতে আশা পর্যটকরা ভালো মানের হোটেল-মোটেল না থাকায় বিরম্ব^নায় পরছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সেই সাথে পর্যটক ও ট্যুর অপারেটররা সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প বিকাশে হোটেল-মোটেলসহ উন্নত মানের নৌযানের দাবী জানিয়েছেন।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আশা সালমা বেগম নামের এক পর্যটক বলেন, এবার নিয়ে দ্বিতীয়বার সুন্দরবন ভ্রমনে এসেছি। খুবেই ভালো লাগছে। বিশেষ করে ঝুলন্ত ব্রীজ ও চলাচলের জন্য নতুন নতুন ফুট ট্রেইলার খুবই ভালো লেগেছে। এগুলো আগে ছিলো না। এছাড়া আরও একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ভালো মানের কোন খাবার হোটেল ও মোটেল নেই। যে কারনে ইচ্ছা থাকলেও থাকতে পাচ্ছি না। খুব ইচ্ছা ছিলো আরও দুই-একদিন থেকে সুন্দরবনের অন্যান্য পর্যটন স্পট গুলো ঘুড়ে দেখা।
বোট চালক জাকির হোসেন বলেন, সুন্দরবন দেখতে প্রচুর দেশি-বিদেশী পর্যটকরা আসেন। কিন্তু ভালো মানের কোন খাবার হোটেল বা থাকার জন্য উন্নত মানের আবাসিক হোটেলের সল্পতা রয়েছে, যে কারনে ইচ্ছা থাকলেও পর্যটকরা থাকতে পারেন না। পর্যটকরা যদি একটু বেশি সময় নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমন করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের আয়-রোজগারও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া উন্নত মানের নৌযান কম থাকায় সুন্দরবনের অনেক খাল ও নদীতে পর্যটকরা যেতে পারেন না। এর ফলে সুন্দরবনের অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য থেকে পর্যটকরা বঞ্চিত হন।
সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবনকে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে আরও বেশি আকৃষ্ট করতে করমজলে এক কিলোমিটার নতুন ফুট ট্রেইলার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া একটি জুলন্ত ব্রীজ ও একটি আরসিসি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। একই সাথে পর্যটকরা যাতে সুন্দরবনের সবতথ্য একসাথে পায় সে জন্য করমজলে নির্মাণ করা হয়েছে ইনফরমেশন সেন্টার। তিন মাস বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়ার প্রথম দিনেই করমজলে ৪শ ৯জন পর্যটকের এসেছে। এছাড়া সময়ের সাথে সাথে ভীড় বাড়তে শুরু করেছে করমজলে। আমরা বনরক্ষীরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এছাড়া গত অর্থ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে পর্যাটক আগমনের সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৩৭ হাজার। আর রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ বছর পর্যাটকদের সংখ্যা ও রাজস্ব আদায় দ্বিগুন হবে বলে আশা করছি।