মো:নজরুল ইসলাম,ঝালকাঠি : ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে অঝোরে কাঁদলেন অন্তঃসত্ত্বা মা” এবং পরবর্তিতে “ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে টাকা ছাড়া সেবা নেই” শিরোনামসহ বিভিন্ন শিরোনামে কয়েকটি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ ও বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফেরদৌসী বেগম উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম গত ৬ ফেব্রুয়ারী সরেজমিন তদন্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে এসে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ না করেই চলে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে ঝালকাঠি জেলা পরিবার পরিকল্পানা বিভাগের উপপরিচালক ফেরদৌসী বেগম দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিচালক (প্রশাসন) বরাবরে আবেদন করেন। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাক্তার জোয়াহের আলী দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারী লক্ষি রানি সিকদার ও মনিকা রানি মিস্ত্রিকে সংযুক্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরত পাঠান এবং আরেক কর্মচারী জেসমিন নাহারকে জানুয়ারী মাসের ৪ তারিখে কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া এমসিএইচ ইউনিটে বদলী করেন। ওখানে দায়িত্বরত কর্মচারী ঝুমুর আক্তারকে ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। কৌশলী নাজমুন্নাহার আমুয়ায় যোগদান না করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজসে নাজমুন্নাহার, লক্ষি রানি সিকদার ও মনিকা রানি মিস্ত্রি স্ব পদে ১০ জানুয়ারী ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে উপপরিচালকের দেয়া আবেদনের ভিত্তিতে দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা আসে। এর প্রেক্ষিতে বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম গত ৬ ফেব্রুয়ারী সরেজমিন তদন্তে আসেন। সেখানে পরিদর্শিকা জুলিয়ারা জেসমিন, নাজমুন্নাহার, লক্ষি রানি সিকদার ও মনিকা রানি মিস্ত্রি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত এবং অভিযোগকারী আছিয়া বেগম, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, আ. রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান রুবেলদের কাছ থেকে কোন স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। এব্যাপারে তদন্তকর্মকর্তা বরিশাল বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, “উপপরিচালকের দেয়া আবেদনের ভিত্তিতে সরেজমিন তদন্তে গিয়েছিলাম। সেখানে অভিযোগকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের সাথে কথা বলে আসছি।” অভিযোগকারী ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের প্রতিবেদকের কাছে জানতে চাওয়ার জন্য কোন নোটিশ বা চিঠি দিয়েছিলেন কি না ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার কাছে তদন্ত আসছে তাই আমি গিয়েছি। অভিযোগকারীদের খুজে পাইনি। আপনার কাছে যদি অভিযোগকারীদের কারো মোবাইল নম্বর থাকে তাহলে আমাকে দিয়ে একটু হেল্প করবেন” বলে প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে এসব কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. জোয়াহের আলী, ভিজিটর জেসমিন নাহার, লক্ষ্মী রানি সিকদার, মনিকা মিস্ত্রি, মনিরা সুলতানা, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা জুলিয়ারা জেসমিন ও আয়া মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করে সরকারী চিকিৎসায় মোটা অংকের অর্থ আদায় করছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো।