২০২২ সালেই সুন্দরবন দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের প্রত্যয়

প্রকাশঃ ২০২১-০২-১৫ - ১৬:৩৩

ইউনিক প্রতিনিধি : আগামী বছর ২০২২ সালেই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের মাধ্যমে সুন্দরবন দিবস পালনের প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার সুন্দরবন দিবস উদযাপিত হয়েছে। ‘বিশ^ ভালবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালবাসুন’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল রোববার সকালে সুন্দরবন দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল এ আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ মইনুদ্দিন খান। মুখ্য আলোচক ছিলেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন। সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন একাডেমির উপদেষ্টা এবং রূপান্তর-এর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, বন বিভাগের ডিসিএফ জাহের ইকবাল, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফর ইন্টিগ্রেটেড স্টাডিজ অন দ্য সুন্দরবনস-এর পরিচালক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. দিলীপ দত্ত, সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন, শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল মালেক রেজা, বাগেরহাট ফাউন্ডেশন আহাদ উদ্দিন হায়দার, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, সাংবাদিক বাবুল দাস, উন্নয়ন কর্মী শেখ জার্জিসউল্লাহ, প্রমুখ। বক্তারা তাদের আলোচনায় বলেন, সুুন্দরবন সুরক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। বনবিভাগ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ^বিদ্যালয়, উন্নয়ন সংগঠন এবং পরিবেশবাদীদের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগ জরুরী। এ ছাড়া সুন্দরবন নিয়ে মৌলিক গবেষণা প্রয়োজন। খুলনা বিশ^বিদ্যালয়কে এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সুন্দরবন সুরক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা আরও শক্তিশালী করতে হবে। বক্তারা বলেন, সুন্দরবন ব্যবস্থাপনা প্লানকে যুগোপযোগী করতে হবে। ১০০ বছরের পুরানো প্লান দিয়ে যথাযভথাবে সুন্দরবন সুরক্ষা হবে না। সুন্দরবনের আশপাশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এ কার্যক্রমে সুন্দরবনে কী ক্ষতি হচ্ছে তার সমীক্ষাও প্রয়োজন। সুন্দরবনকে সার্বজনীন ভালবাসার বস্তুতে পরিণত করতে হবে। এজন্য সুন্দরবন দিবসের সরকারী স্বীকৃতি দরকার। অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সুন্দরবনের সুরক্ষার বিষয়টি ভাবতে হবে। সুন্দরবন সম্পদ আহরণের আধার- এই দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিতে হবে। সুন্দরবন থেকে আমাদের রাজস্ব আহরণ এখন আর জরুরী নয়। এখন জরুরী সুন্দরবনকে রক্ষা করা। এজন্য জনগণের মাঝে সুন্দরবনের মালিকানাবোধ তৈরী করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০০১ সালে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয় ১ম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন। নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে সাফল্য পাওয়া সে সম্মেলনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন সেই সময়ের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ। ২০০১ সালের সেই সুন্দরবন সম্মেলনের পরের বছর থেকেই খুলনাসহ সুন্দরবন সন্নিহিত জেলাগুলোতে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। করোনার প্রদুর্ভাব শুরু হবার আগে বন বিভাগ ও সুন্দরবন একাডেমীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এ উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন- বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুন্দরবন সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমী আপামর মানুষ।