বিশেষ প্রতিবেদক: খুলনার সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও শেখ বাড়ির ছত্রছায়ায় জমি দখল, সিটি কর্পোরেশন ও সড়ক বিভাগের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজে ব্যাপক অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা বাগিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালী ঠিকাদার তৌহিদুল ইসলাম আজাদ। সাধারন মানুষকে কব্জা করে জমি দখল করে কামিয়েছেন কোটি টাকা। খুলনা ও ঢাকায় গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি—গাড়ি ও কয়েক একর জমি। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর কিছুদিন লুকিয়ে থাকলেও ম্যাজিক দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন খুলনা শহরে। ক্ষমতার জোড়ে একাধিক জমি করেছেন দখল। তার বিরুদ্ধে অপরাধের একাধিক অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য ক্ষমতায় ফিরেছেন খুলনায়। এদিকে, তাঁর সম্পদ অর্জনের বিষয় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনার অনেক ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নেয়া দি আজাদ ইঞ্জিনিয়ার্স প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম আজাদ। প্রতিষ্ঠানটি নগরীর ৮৯, রেলওয়ে এপ্রোস রোডে (স্টেশন রোড) অবস্থিত। আজাদ খুলনার একটি বেসরকারি বিশবিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য। সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের আশীর্বাদে কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে অনিয়ম করে অর্থ লোপাট করেছেন। তিনি গল্লামারীর আলোচিত যুবলীগ নেতা হাফিজুর রহমান হাফিজের মাধ্যমে খুলনার বেসরকারি নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জমি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম করেন। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। এই ঠিকাদার নগরীর সোনাডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠা করেছেন খুলনা হেলথ কেয়ার হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল গড়েছেন। যেখানে বিনিয়োগ হয়েছে অবৈধ আয়ের অর্থ।
আরো জানা যায়, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে খুলনার প্রভাবশালীদের প্রভাবে নিজ ক্ষমতার দাপটে সিংহভাগ কাজ বাগিয়ে নিতেন। তিনি ছিলেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের একজন প্রভাবশালী ঠিকাদার। শেখ বাড়ির ও পলাতক সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের আশীর্বাদে ও প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। আজাদ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি রূপসা ঘাটে ফেরি ও নৌকা পারাপারের টাকাও তুলতেন। এছাড়াও কয়েক কোটি টাকা ব্যাংক লোন নিয়ে তা আত্মসাত করেছেন। খুনি এরশাদ শিকদারের পতন ও মৃত্যুর পরে আাজাদ খুলনা ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের একক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এমনকি খুলনা ঘাটে কার্গো বোঝাই সিমেন্টও তিনি লুট করেছেন।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তৌহিদুল ইসলাম আজাদ ঢাকার উত্তরায় ছয়তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ির মালিক। তার ঢাকা অফিস ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ফ্লাট নং : এ—১, বাড়ী নং : ১৯, রোড নং : ৬/বি, সেক্টর : ১২, উত্তরা আবাসিক এলাকা। এছাড়াও রয়েছে বসুন্ধরা ও ধানমন্ডি এলাকায় আলিশান ফ্লাট ও বাড়ি। খুলনার দারোগা পাড়ায় রয়েছে আলিশান বাড়ি।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর আজাদ ঢাকায় কিছুদিন গাঁ ঢাকা দিয়ে ছিলেন বর্তমানে আজাদ বহাল তবিয়তে খুলনায় অবস্থান করলেও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে তিনি কেসিসির পলাতক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রভাবে দখলবাজ লোক নিয়ে এলাকায় ঘুরতেন। তার অত্যাচারে সাধারন মানুষ নির্যাতিত।
এ বিষয়ে জানতে তৌহিদুল ইসলাম আজাদের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। অফিসের অন্যান্যরা জানান, তৌহিদুল ইসলাম আজাদ মাঝে মধ্যে অফিসে আসেন।