মোংলা প্রতিনিধিঃ খুলনা-মোংলা মহাসড়ক সংস্কারের অভাবে খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। বন্দর শহর মোংলার সাথে সারা দেশের সড়ক পথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়ক। দীর্ঘ ৪২ কিলোমিটার সড়ক পথের প্রায় ২৫/৩০ কিলোমিটার সড়ক এখন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের কাটাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ স্থানে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কের বেশির ভাগ অংশে কাপেটিং ফেটে ১ ইঞ্চির মত চওড়া হয়ে ফেটে মানচিত্রের মত হয়ে গেছে। সড়কের গোনা বেলাই বাজার ব্রীজ থেকে দিগরাজ বাজার পর্যন্ত কোথাও কার্পেটিং নেই। কার্পেটিং উঠে গর্ত আর খানাখন্দকে পরিনত হয়েছে। সড়কের এই অংশ চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খানাখন্দক আর গর্ত বন্ধ করতে নিম্নমানের ইট ফেলা হয়েছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দূর্ভোগ যা ছিলো তাই রয়ে গেছে। গর্তে ফেলা ইটের গুড়ি উঁচু নিচু হয়ে যাওয়ায় সব ধরনের যানবাহন দুঘটনার ঝুঁকিনিয়ে হেলে দুলে চলাচল করছে। নাভানা লিঃ এর সামনে থেকে দিগরাজ পর্যন্ত একেবারেই বেহাল দশা। মোংলা বন্দর থেকে প্রতিনিয়ত রাত দিন জুড়ে পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। অনেক সময় খানাখন্দকে পড়ে যানবাহন দুর্ঘটনার পাশাপাশি সড়কের উপর বিকল হয়ে পড়ছে। এই সড়কে নিয়মিত চলাচল করে এমন একজন ট্রাক চালকের সাথে এ প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন, রাস্তা যে অবস্থা হয়েছে তাতে আর মোংলায় আসা যাওয়া করা যাবে না। তিনি বলেন, বিশেষ করে নাভানা লিঃ এর সামনে থেকে দিগরাজ বাজার পর্যন্ত যে অবস্থা হয়েছে তাতে চলাচলের কোন উপায় নেই। ট্রাক লোড দিয়ে চলাচল করতে মারত্বক ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। এই সড়ক দিয়ে ঢাকা, খুলনা, চট্রগ্রাম, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দূরপাল্লার বাসসহ আন্তঃজেলা বাস মিনি বাস ও পণ্য বাহী অসংখ্য বাস ট্রাক চলাচল করে প্রতিদিন। বর্ষা হলেই কার্পেটিং উঠে পরিণত গর্তে পানি জমে যায়। দীর্ঘক্ষণ পানি জমে থাকায় সড়কের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে কাটাখালী থেকে গোনা বেলাই বাজার ব্রীজ পর্যন্ত সড়কের অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে ছোট ছোট গর্তে পরিণত হয়েছে। যানবাহনের চালকেরা বাধ্য হয়ে গতি কমিয়ে চলাচল করছে। খুলনা-মোংলা সরাসরি ও রূপসা- মংলা লোকাল বাস রুটের কয়েকজন চালকের সাথে কথা বললে তারা বলেন, এখনো ছোট বড় গর্ত অতিক্রম করে চলাচল করা গেলেও সহসা সড়ক মেরামতের উদ্দ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে। এদিকে চুলকাঠি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে থেকে ভট্টো বাসস্ট্যান্ড অভিমুখি সড়কের দুই পাশে সারিসারি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বেশ কিছু দিন ধরে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে সড়কের পাশের মাটিতে গর্ত আর খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যাচ্ছে। সম্প্রতি গর্ত ঠিক করতে নিম্নমানের ইট বিছানো হয়েছে। হঠাৎ করে অঘোষিত ট্রাক স্ট্যান্ড হিসাবে ট্রাক চালকেরা কেন এই স্থান বেছে নিলেন এ বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। এ বিষয়ে সড়ক বিভাগ বাগেহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে সড়ক মেরামত করলে দীর্ঘস্থায়ী হবে না, তারপরও বেলাই ব্রীজ থেকে নাভানা লিঃ ও দিগরাজ পযন্ত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক আপাতত মেরামত করা হবে। আপাতত যাতে কোন সমস্যা না হয় সে জন্য নজর রাখা হচ্ছে। বেলাই ব্রীজ থেকে কাটাখালী পর্যন্ত বিভাগীয়ভাবে মেরামত করার প্রস্তাব করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। গোনাই ব্রীজ থেকে নাভানা লিঃ ও দিগরাজ বাজার থেকে ৬ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়েছে। চুলকাঠি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে দুই পাশে অঘোষিত ট্রাক স্ট্যান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব বলে আশ্বাস দেন।