মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগন ইউপির চককবির গ্রাম সংলগ্ন তিনফসলি আবাদী জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মনের অভিযোগ এলাকাবাসী প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ইটা ভাটা প্রাথমিক অবস্থায় স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্র এবং সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, চককবির মৌজার জনৈক সাইফুল ইসলাম ও হাইকুল ইসলামের ৮৪১ ও ৮৪২ দাগে মোট ৩ একর জমিতে বাৎসরিক চুক্তিতে ইটভাটা নির্মাণ কাজের প্রস্তুতি শুরু করছেন পার্শ্ববর্তী পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের রমপুর গ্রামে মো. লোকমান আলী। পক্ষান্তেরে এলাকার তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা ভাটা নির্মান বন্ধের দাবীতে গণ স্বাক্ষরসহ জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে গণ স্বাক্ষর সম্মিলিত গ্রামবাসীর পক্ষে অভিযোগ দাখিল করেছেন চককবির মীরপাড়া গ্রামের সৈয়দ সুলতান আহম্মেদ।
উক্ত নির্মাণাধিন ভাটা থেকে থেকে ৫০ গজ দুরেই দু’টি গ্রামে এবং গ্রাম গুলোতে রয়েছে পৃথক পৃথক দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। নির্মাণাধীন ভাটাটি সংলগ্ন ৩টি গ্রাম (গুচ্ছ গ্রাম, আশ্রয়ান চককবির মীরপাড়া) গ্রামে প্রায় ৫ হাজার অধিক লোকের বসবাস।
চককবির মীর পাড়া গ্রামের কৃষক আ: রাজ্জাক (৪৭) ও গৃহীনি মোর্শেদা বেগমসহ অনেকেই বলেন, এখানে ভাটা নির্মাণ হলে এলাকার অনেক জমির ক্ষতি হবে। একই সাথে গ্রামের গাছ-পালা, পরিবেশ দূষণ হবে। তাই আমরা ইটভাাটা নির্মাণ চাই না।
এদিকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এহেতেশাম রেজা গত ১৭ জুলাই নির্মাণাধীন ইটভাটা এলাকা পরিদর্শণ করেন। একইভাবে ফুলবাড়ী সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাসিম আহম্মেদ ইটভাটা এলাকা পরিদর্শণ করেন।
চককবির গ্রামের সৈয়দ সুলতান আহম্মেদ বলেন, এখানে ইটভাটা নির্মান করা হলে গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্য ঝুকিঁসহ পরিবেশগত নানা ঝুঁিকতে পড়বেন। পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরাও নানাবিধ ঝুকিঁর মধ্যে পড়বে।
এদিকে সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাসিম আহম্মেদ জানান, অভিযোগে প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এহেতেশাম রেজা-এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ১৭ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত করে ভাটা নির্মাণের ছাড়পত্র (অনুমোদন) না পাওয়া পর্যন্ত ভাটা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একইসাথে এলাকাবাসী অভিযোগের বিষয় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবগত করা হয়েছে।
অপরদিকে তিন ফসলী জমিতে ইটভাটা এবং জমির উপরিভাগ (টপসয়েল) কাটা সরকারী ভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও লোকালয়ে এবং তিন ফসলী জমিতে ইটবাটা নির্মান করার চেস্টা করছেন এমন প্রশ্নে উত্তরে ইটভাটার মালিক মো. লোকমান আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি ওই জমি বাৎসরিক চুক্তি নিয়ে ভাটা নির্মাণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছি। একইসাথে অনুমোদনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে সরাকারি যাবতীয় ফি জমা প্রদান করেছি। একইভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোতির জন্যও আবেদন করেছি। আমি অনুমোতি পেলেই সেখানে ভাটা নির্মাণ করব।