মহিদুল ইসলাম শাহীন, বটিয়াঘাটা (খুলনা) : খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মাথাভাঙ্গা মৌজায় দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে শেখ রাসেল ইকোপার্কের উন্নয়ন কাজ। জমি অধিগ্রহনের পর সাড়ে চারশ’ পিলার দিয়ে গোটা সীমানা ঘেরার পর বিস্তীর্ণ এলাকায় বালি ভরাটের কাজ এগিয়ে চলেছে। আগামী ২০১৯ সালের আগেই গোটা পার্কের কাজ শেষ হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। খুলনা জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধায়নে চলমান এ কাজে বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়ে চলেছে। খুলনার রূপসা ব্রিজের ঠিক দক্ষিণ পাশে বেসরকারী ভাবে গড়ে ওঠা ভুতের আড্ডা পার্কের পাশেই রূপসা নদীর তীরে বাস্তবায়নাধীন শেখ রাসেল ইকোপার্ক। পার্কটি স্থাপনের জন্য প্রায় দেড় বছর আগে সরকারী এ খাস জায়গা নির্ধারণ করা হয়। দু’হাজার একশ’ ফুট লম্বা এবং সাড়ে নয়শ’ ফুট চওড়া পার্কের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি ইতোমধ্যে সাড়ে চারশ’ পিলার দিয়ে সীমানা ঘেরা হয়েছে। এ কাজের জন্য সরকার প্রাথমিক ভাবে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। পরবর্তীতে বিস্তীর্ণ এ জায়গায় বালি ভরাট এবং কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদ থেকে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকার দক্ষিণাঞ্চলের বটিয়াঘাটায় একটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত পূর্ব থেকেই হাতে নিয়েছে। ইকোপার্কটি হবে এ এলাকার মানুষের জন্য তারই প্রথম পদক্ষেপ। রূপসা ব্রিজ থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে ৪ নম্বর মাথাভাঙ্গা মৌজায় পার্কটি ধিরে ধিরে গড়ে ঊঠছে। রূপসা নদীর তীরে ঘোলা পানি বিধৌত চরে পার্কটি গড়ে উঠার পর এটি হয়ে উঠবে অন্যতম একটি চিত্ত বিনোদন স্থান। পার্কটি দৃষ্টি নন্দন করে গড়ে তোলার জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী সার্বক্ষণিক তদারকিতে রেখেছেন। তারা আশা করেন শেখ রাসেল ইকোপার্কের যাবতীয় কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলে এটিই হবে সর্ববৃহদ চিত্ত বিনোদনের অন্যতম জায়গা। সরকারী আর্থিক সহায়তায় গড়ে ওঠা এ পার্কে থাকবে ব্যতিক্রম কিছু রাইডার। যেখানে বয়াস্ক লোকরাও বিনোদনে অংশ নিতে পারবেন। রূপসা নদীর তীরে পানির উপর তৈরী হবে চলন্ত দোলনা। এছাড়া শিশু ও মহিলাদের জন্য থাকবে উন্নত মানের রাইডার। এদিকে ইকোপার্কের কাজ চলমান থাকলেও শত শত দর্শক পার্কের মধ্যে নয়নাভিরাম দৃশ্য খুঁজতে প্রতিদিন ভিড় করছে। সূর্য ওঠা আর অস্ত যাবার দৃশ্য বুকে নিয়ে তারা বাড়ি ফেরেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, বটিয়াঘাটা উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে শেখ রাসেল ইকোপার্ক হবে একটি স্টার। এ পার্কের মাধ্যমে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে বটিয়াঘাটার সুনাম। সর্ব শক্তি নিয়োগ করে কাজের মান অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করা হবে। বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান বলেন, পার্কের কাজ চলমান রাখার জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা বালি ভরাটের জন্য দেয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রয়োজনে আরও সহায়তা করা হবে। শেখ রাসেল ইকো পার্কটি দৃষ্টি নন্দন রূপে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। শেখ রাসেল ইকোপার্ক সুন্দর ও মোহনীয় করে গড়ে তোলার জন্য সার্বক্ষণিক কাজের তত্বাবধানে রয়েছেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্য) আবু সায়েদ মো: মনজুর আলম। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, পার্কের কাজ ইতোমধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে। প্রায় বিশ লাখ টাকা ব্যয়ে বালি ভরাটের কাজ শেষের পথে। সরকারী ভাবে আর্থিক সহায়তা পাইপ লাইনে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সার্বিক কাজ সুন্দর ও সুচারু ভাবে সম্পন্ন হবে। খুলনা জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান বলেন, প্রায় দেড়শ’ বিঘা জায়গার উপর শেখ রাসেল ইকোপার্কটি স্থাপন করা হচ্ছে। কাজটি শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য এটি হবে একটি মডেল পার্ক।