বটিয়াঘাটায় অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীদের জন্য হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি

প্রকাশঃ ২০১৮-০২-১১ - ১০:৩০

ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, বটিয়াঘাটা : বটিয়াঘাটা উপজেলায় কৃসি জমিতে অবৈধ প্লট ব্যবসায়ীরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আবাসিক, বানিজ্যিক ও শিল্প করখারখানা নির্মান পূর্বক কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যা দেখার কেউ নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাম সর্বস্ব ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এ সকল প্লট ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে কৃষি জমি ধ্বংস করে কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাচ্ছে। এদিকে কৃষি জমি অকৃষি অর্থাৎ আবাসিক বানিজ্যিক ও শিল্প কাজে ব্যবহারের নিমিত্ত ক্রয় বিক্রয় ও নামজারির ক্ষেত্রে কালেক্টরের অনুমতি গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত ২৪ অক্টোবর ০৫.৪৪.০০০০.০০২.১৯.০০৩.১৭-১০০৪(১৮) নং স্মারকে ও গত ৮ নভেম্বর ০৫.৪৪.৪৭০০.০৩১.০৬.০০৭.১৭ নং স্মারকে এ নির্দেশ প্রদান করেন।
সূত্রে প্রকাশ কৃষি খাস জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালের ১৬১ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘কৃষি জমি অকৃষি কাজের জন্য বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যাবে না। প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৯০ ধারার বিধান মোতাবেক আবাসিক, শিল্প বা বানিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য কৃষক নয় এমন ব্যক্তি কালেক্টর বা উপযুক্ত কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে কৃষি জমি ক্রয় করতে পারবেন।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনুমোদন ব্যতিরেকে যে সকল প্লট ব্যবসায়ী আবাসিক প্লট বিক্রয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রচারনা করছে তাদের জমির তথ্য এবং শিপ্ল প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য জমি ক্রয় করছেন তাদের তথ্য পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নিদের্শনা প্রদান করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অদ্যাবধি গ্রহীত ব্যবস্থা জানা যায়নি। অন্যদিকে ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালের ১৬১ ধারা এবং প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৯০ ধারার বিধান মোতাবেক অনুমোদিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক প্লট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিকানা ও জমির তথ্যাদি ১৫ দিনের মধ্যে বাহক মারফত প্রেরন করতে এবং এ ধরনের নামজারির ক্ষেত্রে কালেক্টরের অনুমোদন গ্রহনের বিষয়টি নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: আমিন উল আহসান ও জেলা রেজিষ্ট্রার বীর জ্যোতি চাকমা গত ২৮ জানুয়ারী ৭৬(৯১)নং স্মারকে বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধূরী ও সাব-রেজিষ্টার সুব্রত কুমার সিংহ বরাবর লিখিত অনুলিপি প্রদান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশ প্রদান করেছে। অপরদিকে উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্লট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এ সকল প্লট ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সরকারী ভরাটি খাস খালগুলোর উপর দিয়ে প্লটের রাস্তা নির্মান পূর্বক কৃষি জমি ধ্বংস করে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। কৃষি অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায় ১৯৮৩ -৮৪ সালে এ উপজেলা কৃষি জমি ছিল ১৯ হাজার হেক্টর। প্লট ব্যবসা ও শিল্প করখানা প্রতিষ্ঠা করায় বর্তমানে কৃষি জমি কমে গিয়ে ১৫ থেকে ১৭ হাজার হেক্টর এ পরিনত হয়েছে। আর এভাবে প্লট ব্যবসা চলতে থাকলে এ উপজেলায় কৃষি জমি খুজে পাওয়া যাবে না। এ উপজেলায় আতপ অর্থাৎ ভাটেল চালের জন্য দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু প্লট ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় না আনলে জলমার ভাটেল চালের সুনাম হারিয়ে যাবে। বিশেষ করে জলমা ও বটিয়াঘাটা ইউনিয়নে কৃষি জমিতে ব্যাঙের ছাতার মতে গড়ে তুলছে আবাসিক ও শিল্প করকারখানা। যার আইনের কোন বালাই নেই। এ ব্যাপারে এলাকার সচেতন মানুষ কৃষি জমি রোধে ভূমি মন্ত্রনালয়সহ সংশিষ্ট দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।