ফুলবাড়ীগেট(খুলনা): পরকিয়া এবং যৌতুকের দাবি পূরন করতে না পারায় সংসার ভাংলো দুই সন্তানের জননী অসহায় এতিম পারভিনের। স্বামীকে ফিরে পেতে এবং বিচারের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে বিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতের স্বরনাপর্ন হলে আদালত আসামী তাহেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন। ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ এবং পৃত্রি হারা কথা ভেবে স্বামীর সকল অত্যাচার-নির্যাতন দিনের পর দিন সহ্য করেও স্বামীকে ধরে রাখতে পারলেন না অসহায় পারভীন আক্তার। কলেজ পড়–য়া মেধাবী ছাত্র ১৬ বছরের পুত্র এবং ৭ম শ্রেনীর স্কুল পড়ুয়া কণ্যা সন্তানের কথা না ভেবে শেষ পর্যন্ত কুয়েট কর্মচারী আবু তাহের হাওলাদার তালাক দিলেন পরভীনকে। স্বামীকে ফিরে পেতে যৌতুকসহ অত্যাচার-নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে পারভীন আদালত এবং কুয়েট কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযুক্ত তাহের ২০/১১/১৭ স্ত্রীকে গোপনে তালাক দিয়ে ২৩/১/১৮ তারিখ আদালতে ক্ষমা প্রর্থনা করে এমন ঘটনা আর না ঘটানো অঙ্গীকার করে আপোষ মিমাংশা করেন নেয়। আপোষ মিমাংশার দ্ইু মাসের মাথায় ঘটনার পুনঃরাবৃত্তি ঘটায় পারভীন স্বামী তাহেরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালকে অবহিত করলে বিজ্ঞ আদালত অভিযুক্ত তাহের-কে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলার বিবরণে এবং ভুক্তভোগী সুত্রে জানাগেছে কুয়েটের ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী বাবুচ্চি মোঃ আবু তাহের (৪০) সাথে গোপালগঞ্জের দিগনগরের মৃত জসিম হাওলাদারের কণ্যা পারভীন আক্তারের সাথে ১৯৯৯ সালে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে স্বামী তাহের দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে স্ত্রীর উপর চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে পারভীন পৃত্রি হারা হলে টাকা দিতে না পারায় তার উপর শারীরিক ও মানবিক নির্যাতন চালানো হয়। এ অবস্থায় তাহেরের পূর্ব পরিচিত এক সন্তানের জননীর অর্থলোভে তার সাথে পরকিয়ায় অবৈধ সম্পর্কে গড়ে তোলে। স্বামীর অত্যাচার এবং পরকিয়ায় দ্বিতীয় বিবাহ থেকে বিরত রাখতে ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুয়েট ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর সু-বিচার চেয়ে পারভীন একটি আবেদন করলে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। স্বামীর অমানবিক নির্যাতনে পারভীনকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি আদালতেও গড়ায়। আদালত মামলা আমলে নিয়ে যোগীপোল ইউনিয়ন পরিষদকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। যোগীপোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বার সমন্বয় তদন্ত কমিটি যৌতুক এবং নির্যাতন সহ সকল অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। চালাক চতুর তাহের সাজা নিশ্চিত বুঝতে পেরে যৌতুক দাবি করবে না, নির্যাতন করবে না, স্ত্রী সন্তানদের খোরপোষ, ভরন পোষন দিয়ে প্রতিপালন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ সকল ব্যায় বহন এবং স্ত্রী সন্তানদের দিয়ে সংসার করার অঙ্গীকার করে আদালতে আপোষ নামার মাধ্যমে মিটিয়ে নেয়। আপোষ মিমাংশার দুই মাসের মধ্যে বিষয়টির পূনবাবৃত্তি ঘটায় ২২শে ফেব্রুয়ারি খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল আদালত অভিযুক্ত তাহেরকে জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন। পারভীন স্বামীকে ফিরে পেতে এবং বিচারের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে দ্বারে ঘুরে ঘুরে বিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতের সু-বিচারের জন্য স্বরনার্প হয়েছে।