খুলনা : খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রীতিভোজে এক চিকিৎসকের নেতৃত্বে মেডিকেল কলেজের ৩০-৩৫ জন ছাত্ররা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে মারমুখি আচরন করেন। এ সময় তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ঝিত করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরনে উপলক্ষে হাসপাতালে কনফারেন্স রুমে এ প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। ওই দিন দুপুরে ডাঃ তারিনের নেতৃত্বে এই ঘটনাটি ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগ ও মিডলেভেল চিকিৎসক পরিষদ (পিজিডিটিএস) নেতৃবৃন্দরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
এই প্রথম খুমেক হাসপাতালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হাসপাতালের সকল স্টাফ ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে এই প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিলো। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাসপাতালে মঙ্গলবার থেকে পুলিশ মোতায়েন দেখতে পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানটি ভন্ডুল করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের ক্যাটাগরীতে ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এটি এম মঞ্জুর মোর্শেদ হাসপাতালের সকল স্টাফ, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে একটি প্রীতিভোজ আয়োজন করেন। ওই দুপুরে প্রীতিভোজের সময় খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক, খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাঃ রওশন আরা, নগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ এস এম কামরুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মোঃ মমতাজুল হক উপস্থিত ছিলেন। তারা খাওয়া দাওয়ার করার সময় দুপুরে হঠাৎ করে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (অর্থো) ডাঃ ইউনুস খান তারিনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের নিয়ে প্রীতিভোজে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি ১শ’ জনের মতো ছাত্রদের খাবারের দাবি করলে এই হট্রগোল শুরু হয়। এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে ছাত্ররা মারমুখি আচরন করতে থাকেন। হাসপাতালের প্রশাসনিক ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তৎপরতার থাকার কারণে ছাত্ররা বেশিদুর এগোতে পারেনি। এই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের স্টাফ, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে এরকম অপ্রীতিকর ঘটনায় সাবই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
খুমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, ‘অনুষ্ঠানে ছাত্রদের কোন অংশগ্রহণ না থাকলেও একটি পক্ষের ইশারায় তারা অনুষ্ঠান ভন্ডুল করতে উপস্থিত হয়। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমি কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়েছি। এতে চিকিৎসকদের কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বদমান করাতে চাচ্ছে।’
খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক সভাপতি ও হাসপাতালের মিডলেভেল চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও মেডিকেল অফিসার (অর্থো) ডা. ইউনুস খান তারিন সাংবাদিককে জানান, দুপুরের ওই অনুষ্ঠানে হঠাৎ করে মেডিকেল কলেজের কয়েকজন ছাত্র হাজির হয়। তারা খাবার টেবিলে খেতে বসলে হাসপাতালের সুপার তাদের অপমান করে বের করে দেয়। খবর পেয়ে সাধারণ ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে প্রতিবাদ জানায়।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মোঃ মমতাজুল হক বলেন, হাসপাতালের অফিসের সময় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এমনি সাধারণত সব সময় পুলিশ ডিউটি থাকেন। কোন ধরনের যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ অফিস চলাকালিন উপস্থিত ছিলো