খুলনা : নানা নাটকীয়তা শেষে আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলের নগর শাখার সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বেছে নিয়েছে। এর ফলে দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন বর্তমান মেয়র ও দলের নগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি। এ নিয়ে খোদ দলের নেতাকর্মীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।সোমবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এর আগে রোববার দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আসন্ন দুই সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয় বিএনপি। মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, খুলনা সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুধুমাত্র ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। বাকি নির্বাচনগুলোতে বরাবরই বিএনপি সমর্থিত মেয়র নির্বাচিত হয়ে আসছেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির নগর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি। এবারও ভাবা হচ্ছিল তিনিই ধানের শীষের মনোনয়ন পাচ্ছেন।
সূত্র আরও জানায়, গত নির্বাচনে ছাড় দিলেও এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নগরে মেয়র প্রার্থী দাবি করে প্রচারণা করে আসছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রভাবশালী প্রার্থীর নাম ঘোষণা ও দলের নেতাকর্মীদের দ্বিধা বিভক্তির কথা চিন্তা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি কেসিসিতে মেয়র পদে লড়তে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নাম উত্থাপন করেন। বরাবরের মতোই মঞ্জু মেয়র পদে আগ্রহী নন বলে মনিকে সমর্থন দেন। তবুও শেষ মুহুর্তে নানা নাটকীয়তা শেষে নির্বাচনে জয়লাভ করতে বিএনপি তাদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেয়।
এ বিষয়ে বিএনপির নগর শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হক শাওন বলেন, খুলনার বিএনপি নেতাকর্মীরা মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনিরুজ্জামান মনিকে চেয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মোকাবেলার জন্য বিএনপি তাদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বেছে নিয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে কর্মীরা সন্তুষ্ট। ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কাজ করবো।
প্রসঙ্গত, নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনাঞ্চলের বিএনপির নিয়ন্ত্রক বলে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে লড়াই করে তিনি ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় তিনি এমপি পদে লড়তে পারেননি। ফলে প্রায় ৫ বছর ধরে তিনি দলের মতোই ক্ষমতার বাইরে রয়েছেন। বিএনপির একটি অংশ বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচন হওয়ায় বিএনপি তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে।