অধিনায়ক হিসেবে শুক্রবার আমার শেষ ম্যাচ। অবশেষে জানিয়ে দিলেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবসরের কথা জানালেন টাইগার অধিনায়ক।
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া…..চলমান এক আবেগ গোটা বাংলার। যে আবেগ ছুয়ে গেছে সারা বিশ্বকে। দুনিয়ার এই প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। গ্রেটরা এক বাক্যে বলেছেন মাশরাফী তুমি সেরা; তোমার নেতৃত্বে গর্জে উঠে বাংলাদেশ।
সত্যিইতো। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের কারিগরতো তিনিই।
বয়স বেড়েছে। ফর্ম পড়েছে। প্রকৃতির বাদবাকি সব কিছুর নিয়মেই তাই মাশরাফীরও শেস হয়েছে সময়। স্বর্নালী এক সময়ের শেষ তাই করতেই হচ্ছে। সবাই জানতো। শুধু বাকি ছিল তার মুখে বলাটা। সেটাও হয়ে গেল।
তবে অধিনায়কত্ব ছাড়লেও খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। দলের অংশ হয়ে থাকার ইচ্ছার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মাশরাফি। এ সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তাঁকে যে অনেক ভাবতে হয়েছে, সেটা জানিয়েছেন মাশরাফি। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেয়ার মতো সম্মানের পদ ছাড়ার ব্যাপারে মাশরাফী বলেন, ‘একটা মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য অন্তত কিছুটা সময় দেয়া উচিত। ১৫ বছর ধরে এটা আমার জীবনের অংশ। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অংশ। আমার যত অর্জন বা জীবনে যা কিছু করেছি, সব এ খেলা দিয়ে। আমার জীবনের অন্যতম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটা। ফলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে আমার সময় দরকার হতো।’
ক্রিকেটকে তিনি দিয়েছেন অনেক। পেয়েছেন কোটি ভক্তের ভালোবাসা। বিদায় বেলা কি নিয়ে যাচ্ছেন?
মাশরাফী বলেন, কালকে আমার শেষ ম্যাচ অধিনায়ক হিসেবে। আমার প্রতি এত দীর্ঘ সময় আস্থা রাখার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। আমার নেতৃত্বে যত ক্রিকেটার খেলেছে বাংলাদেশ দলে, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমি নিশ্চিত এই প্রক্রিয়াটা সহজ ছিল না, গত ৪-৫ বছরে ভ্রমণ সহজ ছিল না। ধন্যবাদ জানাই টিম ম্যানেজমেন্ট যারা ছিল, যাদের কোচিংয়ে খেলেছি। নির্বাচক ও বোর্ডের কর্মকর্তা যারা আছেন, বোর্ডের প্রতিটি স্টাফ, সবাইকে ধন্যবাদ সহযোগিতার জন্য। মিডিয়ার যারা আছেন, সবাই সহযোগিতা করেছেন। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই সবশেষে সমর্থকেরা, যারা বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ। আপনাদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতো না।
মাশরাফীর কাছে পৃথিবীর যে কোন কিছুর চাইতে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেয়া। এই গুরু দায়িত্ব এবার যার কাধেই পড়ুক তার জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন।
এ সময় জাতীয় দলের নেতৃত্ব সময় যারা তার পাশে ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার অধিনায়কত্ব শুরু হয়েছিল চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে দিয়ে। এর আগেও পেয়েছিলাম; কিন্তু ইনজুরির কারণে সেভাবে করতে পারিনি। হাথুরুসিংহেকে দিয়েই শুরু এরপর খালেদ মাহমুদ সুজন, স্টিভ রোডস আর (রাসেল) ডোমিঙ্গো…, নির্বাচক ও বোর্ডের কর্মকর্তা যারা আছেন, বোর্ডের প্রতিটি স্টাফ, সবাইকে ধন্যবাদ সহযোহিতার জন্য। মিডিয়ার যারা আছেন, সবাই সহযোগিতা করেছেন। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। সবশেষে সমর্থকেরা, যারা বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ। আপনাদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতো না (এতদুর আসা)।’
একটা অধ্যায়ের শেষ হচ্ছে। কিন্তু মাশরাফী থাকবে কোটি ভক্তের হৃদয়ে। টিমমেটদের চিন্তায়, চেতনায়, ব্যাটিং ও বোলিংয়ে। বাংলাদেশের আবেগের অপর নামই যে মাশরাফী।