ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়ায় শাহীন মেম্বারের স্ত্রী রাবেয়া বেগমের (৩৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার ঘটনা নিয়ে উঠেছে নানা গুঞ্জন। স্বামী শাহীনের পক্ষ থেকে পারিবারিক কলহে মৃত্যু’র কথা বলা হলেও নিহতের পিতা-মাতার দাবি তাকে মারপিট ও নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে থানা পুলিশ লাশের সুরোতহাল রির্পোট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে এবং প্রাথমিক ভাবে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করেছে।
পারিবারিক ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের সাত নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শাহীনুজ্জামান সরদার শাহীনের স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী রাবেয়া বেগম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। থানা পুলিশ শনিবার বেলা ১১টায় মেম্বারের শয়ন কক্ষ থেকে ফ্যানের হুকের সাথে ঝুলান্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে রাবেয়া বেগমের এই মৃত্যু’র ঘটনায় উঠেছে নানা গুঞ্জন। এ বিষয়ে মেম্বারের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক লিখিত ভাবে পুলিশকে দেওয়া অবিহিতকরণ পত্রে উল্লেখ করে জানান, আমার শ্যালক শাহীনুজ্জামান সরদার শাহীনের সাথে আনুমানিক ২৩ বছর পূর্বে খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া এলাকার অবঃপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য’র একমাত্র মেয়ে রাবেয়া বেগমের বিবাহ হয়। তাদের সংসার জীবনে মেঘনা বেগম (২২) ও রোহিত সরদার (১৩) নামের দুটি সন্তানের জম্ম হয়। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে শান্তিতে অতিবাহিত হলেও গত বছর দুয়েক ধরে চলতে থাকে মনো-মানিল্যতা। কারণে অকারণে তাদের মধ্যে হত ঝগড়া বিবাদ। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকেও তাদের মধ্যে হয় ঝগড়া। পরে আমার শ্যালক কাজের প্রয়োজনে বাসা থেকে বাহিরে যান এবং ভাবী তার রুমে থাকেন। বেলা সোয়া ১০টার দিকে আমার শ্বশুর বাসায় ফিরে ভাবীকে ডাকতে ডাকতে দেখেন রুমের ভেতর থেকে বন্ধ করা। তখন তার সন্দেহ হলে তিনি চিৎকার দিয়ে অন্যান্যদের ডেকে দরজা ভেঙ্গে রুমে ঢুকে দেখেন ভাবী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের হুকে সাথে ঝুলে আছে।
এ ঘটনায় স্বামী শাহীন জানান, আমি নিজের ব্যবসা ও ঘেরভেঁড়ির কাজে সময়ে অসময়ে বাসার বাহিরে থাকি। এ ছাড়াও রাজনৈতিক ও সাবেক মেম্বার হওয়ার কারণে অনেক সময় বাহিরে কাটাতে হয়। আর এই নিয়ে স্ত্রী রাবেয়া আমাকে সন্দেহ করে আসছে। আর এই নিয়ে ঘটনার দিন সকালেও টুকটাক কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে আমি মুঠোফোনে জানতে পারি সে আত্নহত্যা করেছে। তবে আমি তাকে কখনো অত্যাচার বা মারপিট করিনি, সে অভিমান করেই আত্নহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে নিহতের পিতা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল অহেদ খান ও মা নুরজাহান বেগম জানান, বছর দুয়েক আগে থেকেই আমাদের জামাই শাহীন পর নারীর প্রতি ঝুকে পড়ে। আর সেই থেকে সে আমাদের মেয়ের ওপর কারণে অকারণে মারপিট করে আসছে। গত ২/৩দিন আগে মেয়ে রাবেয়া ও আমরা জানতে পারি যে, শাহীন আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আর এই নিয়ে রাবেয়া প্রতিবাদ করায় তাকে মারপিট অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার দিন সকালে রাবেয়া আমাদের কাছে ফোন করে কেঁদে কেঁদে সব জানিয়েছে। তাই আমরা নিশ্চিত, আমার মেয়েকে মারপিট ও নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।
ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) সজীব খান ও আমি পরিদর্শন করেছি। লাশের সুরোতহাল রির্পোট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে যার নং-৩৮। তিনি আরও জানান, রাবেয়া বেগমের মৃত্যু নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে মেডিকেল রির্পোট ও তদন্ত কার্যক্রম শেষে অইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।