চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও সিআরবির জোড়া খুনের মামলায় অভিযুক্ত সাইফুল আলম লিমনকে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি মোক্তারকে আদালতে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একইসাথে তার স্বীকারোক্তিতে সজল দাশ নামে এক সহযোগীর কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সেই মামলাও গ্রেপ্তার দেখানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ডিবি।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) ডিসি মুহাম্মদ আলী হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর চকবাজার থানার মেহেদীবাগের ইকুইটি নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে সাদা পোশাকের ‘ডিবি পুলিশ’ তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছিলেন লিমনের বড় ভাই খায়রুল আলম ইমন। যদিওবা ওই সময়ে ডিবির পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ডিবির উপ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে আদালতে সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামি মোক্তার হোসেনকে মারধর করার মামলায় লিমনের সম্পৃক্ত পাওয়া যায়। এই মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাতে তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শেষ রাতে সহযোগী সজল দাশের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় সজল দাশ ও লিমনকে আসামি করে পৃথক মামলা হবে। আগে থেকে করা মারধরের মামলায় লিমনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
গত ১২ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামি মোক্তার হোসেন আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় তার ওপর হামলা করা হয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের এজলাসের বাইরে বারন্দায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে মোক্তার বিচারকের এজলাসে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পান। বিচারককে বিষয়টি জানালে তিনি মোক্তারকে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে মামলা করার নির্দেশ দেন।
এ মামলায় প্রথমে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও মামলার ১৫ আসামির মধ্যে আরও ৮ আসামি গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েও ব্যর্থ হন। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মহিউদ্দিন মুরাদ সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই দিনই লিমনকে মধ্যরাতে নিজ বাসা থেকে তুলে নেয় ডিবি।
২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি সাত রাস্তার সামনে যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু আরমান (৮) নিহত হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় লিমনকে দ্বিতীয় প্রধান আসামি করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সেসময়ও গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন লিমন। এরপর ২০১৫ সালের নভেম্বরে অস্ত্রগুলিসহ লিমনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব-৭।