সরকারি প্রণোদনায় ভাগ বসাতে মাছ চাষীর উপর ইয়াবা ব্যবসায়ীর হামলা

প্রকাশঃ ২০২১-০৫-১৮ - ১৫:৪২

এম.এম.জাহিদ হাসান হৃদয়,(আনোয়ারা,চট্টগ্রাম): ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকায় পদ হারালেও ক্ষমতার দাপট হারায়নি, বিভিন্ন উপায়ে নিরীহের রক্ত চুষাই যার কাজ। বলছিলাম চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলার ৮নং চাতরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশীষ নাথের কথা। মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া সরকারি প্রণোদনায় ভাগ বসাতে তপন নাথ নামের এক নিরীহ মাছ ব্যবসায়ীর উপর তিন দফায় হামলা করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এই নিয়ে গত ১৫ মে আনোয়ারা থানায় অভিযুক্ত আশীষ নাথের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৮নং চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা গ্রামের নাথ পাড়া এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী তপন নাথ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিংহরা গ্রামের তপন নাথ পেশায় একজন পল্লী বিদ্যুতের ইলেকট্রিশিয়ান এবং পাশাপাশি একজন মাছ চাষী। চলতি বছর তার মোবাইলে সরকারি প্রণোদনার ১০ হাজার ২০০ টাকা অনুদান আসে। স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী আশীষ নাথ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুচ্ছফার নাম ভাঙ্গিয়ে সেখান থেকে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। স্থানীয় এক ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতার মাধ্যমে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে নেয়।
পরে বাকী আড়াই হাজার টাকা দিতে অস্বীকার করলে মাদক সেবী আশীষ নাথ একে একে তিনবার তপন নাথের উপর হামলা চালায়।

জানা যায়, আশীষ নাথ আগে চাতরী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ইয়াবা সেবন ও মাদক ব্যবসা করার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ী আশীষের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধের একগাদা অভিযোগ।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী তপন নাথ বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুচ্ছফার কথা বলে আশীষ নাথ ও ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিলে আমার থেকে প্রণোদনার অর্থ থেকে ৫হাজার টাকা দাবী করে। পরে তাদের জোরাজোরিতে স্থানীয় মেম্বার লঘুনাথ সরকারের মধ্যস্থতায় আড়াই হাজার টাকা দিই। পরে আবার টাকা দাবী করলে বিষয়টি আমি ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতির কাছে অভিযোগ করি। অভিযোগ করার সূত্র ধরে আশীষ নাথ ও ফিরোজকে আমার টাকা ফিরিয়ে দিতে বলে।
পরে আশীষ নাথ অভিযোগ করায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি,লাথি মেরে জখম করে। এসময় আমার সদ্য অপারেশন করা বাম চোখ মারাত্বক আঘাত প্রাপ্ত হই।
ভূক্তভোগী তপন নাথ আরো বলেন, সরকারি মৎস্য অফিসের মাধ্যমে আমার বিকাশ নাম্বারে ১০ হাজার প্রণোদনার টাকা আসে। সেখান থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করে ইয়াবা ব্যবসায়ী আশীষ নাথ। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতার মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ২৫০০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। আরো ২৫০০ টাকা না দেয়ায় আমাকে মারধর করে আহত করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে চাতরী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুচ্ছফা বলেন, এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে এই নিয়ে থানায় অভিযোগও হয়েছে। বিষয়টি আমি তদন্ত অফিসারের সাথে কথা বলেছি। তিনি সেটি সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ওসি (তদন্ত) সৈয়দ ওমর বলেন, এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে অগ্রগতি জানতে তিনি অফিসার ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

অভিযোগের অগ্রগতির বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.এম. দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, এই ধরণের একটা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি এখনো তদন্তধীন রয়েছে।