ইউনিক প্রতিবেদক :
নগদ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের একটি ক্ষুদে বার্তায় অসাধু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে অস্বাভাবিক লেনদেনের আখ্যা দিয়ে হাজারো গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রাহকদের দাবি, ওই সকল ই-কমার্স শপে কেনাকাটার অফার নগদ কর্তৃপক্ষ নিজেই দিয়েছিল। এখন নগদ অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকায় নিজের জমানো টাকাসহ অনলাইনে অর্ডারকৃত পণ্যের ফেরত দাওয়া টাকা তুলতে পারছে না নগদ গ্রাহকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে নগদ ব্যবহারকারী হাজারো গ্রাহক।
নগদ সেবা গ্রহণকারী মোঃ রুহুল আমিন বলেন,‘আমি মোবাইলের ব্যবসা করার জন্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ও সিরাজগঞ্জ শপ এ প্রায় এক লক্ষ টাকার পণ্য অর্ডার করে নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট করি কারণ নগদ পেমেন্টে অফার চলছিল। নগদ দিয়ে সিরাজগঞ্জ শপে কেনাকাটা করলে ২০-২৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছিল। কিন্তু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য দিতে না পেরে পরবর্তীতে চাপে পড়ে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে। একদিন আমার মুঠো ফোনে নগদ প্রতিষ্ঠান থেকে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠাই যেখানে অসাধু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে অস্বাভাবিক লেনদেন পরিলক্ষিত হওয়ায় আপনার অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তের পরিপেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ আপনাকে অবহিত করা হবে বলে জানানো হয়।’
মোঃ রুহুল আমিন আরও বলেন,‘ওই সকল ই-কমার্স শপে পেমেন্টের অফার নগদ কর্তৃপক্ষ নিজেই দিয়েছিল। এখন আমার নগদ অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকায় অনলাইনে অর্ডারকৃত পণ্যের টাকা ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই এমনকি অ্যাকাউন্টে আমার পনেরো হাজার টাকা আছে, সেই টাকাও তুলতে পারছিনা। যার ফলে আমি এখন বড় আর্থিক সমস্যার মধ্যে আছি।’
এমন এক গ্রাহকের পিতা মোঃ হায়দার আলী বলেন,‘আমার ছেলে মোবাইলের বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতে চাইলে আমি তাকে ৫০ হাজার টাকা দিলে সে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে পণ্য অর্ডার দেয়। পরবর্তীতে নিউজ পোর্টালে জানতে পারি বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করেছে। গ্রাহকদের পণ্য বা টাকা কোনোটাই দিচ্ছে না। পরবর্তীতে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও আমার ছেলে পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবে নগদের যে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল নগদ কর্তৃপক্ষ সন্দেহজনক লেনদেনের আখ্যা দিয়ে সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। নগদ কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট খুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমার ছেলের টাকাও ফেরত পাচ্ছে না। এখন সে হতাশায় ভুগছে।’
তিনি আরও বলেন,‘এমন ঘটনায় আমার ছেলের মতো লাখো তরুণ উদ্যোক্তাদের আশা ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সকল অসাধু অনলাইন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। তরুণেরা এমন প্রতারণার শিকার হতে থাকলে হতাশা গ্রস্থ হয়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হবে এবং তরুণ উদ্যোক্তার বড় অংশ হারাবে বাংলাদেশ।’