ইউনিক প্রতিবেদক:
শিশু গৃহপরিচারিকাকে যৌন নিপীড়নের মামলা করায় মােংলা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হােসেন ও তার ছেলে রনির বিরুদ্ধে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। সেই সাথে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ করেন পরিবারটি।
আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিশুটির ফুপু মানজুম আক্তার। তিনি খুলনার লবনচরা থানার মােক্তার হোসেন সড়কের বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, মানজুম আক্তারের ভাই রাকিব তালুকদারের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শিশু কন্যা রিভা (১০)কে ২০২১ সালে লালন-পালনের কথা বলে আসামি মােঃ রনি মােংলায় নিয়ে যান। মােংলার বাতেন সড়কে অবস্থিত বাড়িতে নিয়ে রনি ওই রিভাকে প্রায় সময় যৌন নিপীড়ন চালাতো। এবং বিষয়টি কাউকে না বলতে ওই শিশুটিকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দিতেন। শারীরিক নির্যাতনও চালাতেন। এছাড়া রনি’র স্ত্রী রীমা (৩২) ওই শিশুটিকে মারাত্বকভাবে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট সারাদিন বাসার কাজ করে রিভা রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে রনি এসে রিভাকে বিবস্ত্র করে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষনের চেষ্টা করে। তাছাড়া রনির স্ত্রি রিমাও রিভাকে শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। পরদিন সকালে রিভা বাসার একটি মোবাইল ফোন থেকে কৌশলে ফুফু মানজুকে ফোন করে এসব কথা জানায়। খবর পেয়ে ভাই রাকিব তালুকদার ও মানজুম মােংলায় গিয়ে রিভাকে খুলনায় নিয়ে আসে। পরদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)কে ভর্তি করা হয়।
এঘটনায় গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর খুলনা সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ না নিয়ে আদালতে যেতে পরামর্শ দেন। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মানজুম আক্তার বাদি হয়ে রনি ও স্ত্রি রিমাকে আসামি করে পিটিশন দায়ের করে (নং-৯৬/২১)। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরাে অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দেন। ২৮ অক্টোবর খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুমি আহমেদ ভিকটিমের ২২ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরাে অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র পুলিশ পরিদর্শক মনজুরুল হাসান মাসুদ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামি রনি’র বিরুদ্ধে ওই শিশুকে যৌন নিপীড়ন ও শারীরিক নির্যাতনের অপরাধে জড়িত বলে অভিযুক্ত করেন। আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও গ্রেফতার হননি রনি। গত ২০ মার্চ খুলনার আদালত থেকে জামিন নেন আসামি রনি। রনির স্ত্রীকে মামলা থেকে বাদ দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তা ওই অসহায় পরিবারের কাছে ১লাখ টাকা চেয়েছিলেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন মানজুম আক্তার।