ঝিনাইদহে ৪ বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সর্বাধিক হত্যা

প্রকাশঃ ২০২৩-০১-২১ - ২১:২৯

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ২০২২ সালে। পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় শত শত ঘরবাড়ি, লুট করা হয় গরু, ছাগল, মহিষ, ধান, চাল, লাখ লাখ নগদ টাকা, ঘরের আসবাবপত্র, সোনার গহনাসহ বিভিন্ন মালামাল। সামাজিক, রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার, জমি সংক্রান্ত বিরোধ, টাকা লেনদেনসহ নানা কারণে ঘটেছে এসব ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা ও দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন, বলছেন সচেতন মহল। গত ৫ জানুয়ারি দিনে দুপুরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে খুন হন হরিনাকুন্ডু উপজেলার মোবাইল ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম। পাওনা টাকা চাওয়ায় ঘটে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড। প্রধান আসামি গ্রেফতার হলেও বাকিরা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি স্বজনদের। একই উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের নিহত জনির বড় ভাই কাব্বারুল ইসলাম জানান, শুধু হামিদুল ইসলাম জনি না, তার মতো ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলায় গেল বছর খুন হয়েছেন ৪২ জন। যেসব খুনের বেশিরভাগ কারণই ছিলো রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্যের দ্বন্দ্ব। এসব হত্যাকাণ্ড রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সোচ্চার হওয়ার দাবি স্বজনদের। ঝিনাইদহ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সভাপতি আমিনুর রহমান টুকু জানান, আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণেই একের পর এক ঘটে চলেছে হত্যাকাণ্ড। সচেতনতার পাশাপাশি দ্রুত আসামি গ্রেফতার ও বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই এমন হত্যাকাণ্ড কমবে বলে মনে করেন তিনি। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, সামাজিক ও রাজনৈতিক আধিপত্যে যেন আর কেউ খুন না হয়, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সজাগ আছেন। শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিই নন, পুলিশ ও প্রশাসনসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই রাজনীতিবিদ। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ২০২২ সালে ঝিনাইদহে খুন হয়েছেন ৪২ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ০৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ০২ জন, মার্চে ০৫ জন, এপ্রিলে ০৫ জন, মে মাসে ০৩ জন, জুনে ০৩ জন, জুলাইয়ে ০২ জন, আগস্টে ০৫ জন, সেপ্টেম্বরে ০১ জন, অক্টোবরে ০২ জন, নভেম্বরে ০৬ জন ও ডিসেম্বরে ০২ জন হত্যার শিকার হন। এর আগে ২০১৯ সালে ৩৭ জন, ২০২০ সালে ৩০ জন ও ২০২১ সালে ২৫ জন খুনের শিকার হন।