ইউনিক ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাদ্দাম মিয়ার সবজির ক্ষেত। যে ক্ষেত হলুদ-বেগুনি ফুলকপিতে রঙিন। সেই রঙে রঙিন যেন সবজিচাষি সাদ্দামও। আর হবেনই না কেন? ১৫ শতক জমির এই রঙিন ফুলকপি তাঁকে করে তুলেছে লাখপতি। তার এই সফলতায় তাঁর পাশাপশি খুশি কৃষি কর্মকর্তারাও। আগামীতে এই সবজির আবাদ ব্যাপকভাবে করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সবুজ কাণ্ডের মাঝে গাঢ় হলুদ আর বেগুনি রঙের ফুলকপি হয়েছে। সেগুলো দেখতে যেমন বাহারি, বাজার দরও সাধারণের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি। খেতে সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণের কারণে ক্রেতা চাহিদাও ব্যাপক। এদিকে, খরচ অল্প, মুনাফাও বেশি। তাই খুশি সাদ্দাম।
সাদ্দাম মিয়ার বাসা উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী পরিখারপাড় এলাকা। তিনি জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ১৫ শতক জমিতে তিনি এই বাহারি রঙের ফুলকপির আবাদ করেন। ইতোমধ্যে লাখ টাকারও বেশি বিক্রি হয়েছে। তার ধারণা, সব বিক্রি হলে খরচ বাদে তাঁর মোট মুনাফা হবে এক লাখ টাকার চেয়েও বেশি।
উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন কৃষিব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বাইতুল হক জানান, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় মানিকদী পরিখারপাড় এলাকার কৃষক সাদ্দাম হোসেনের মাধ্যমে এই বাহারি ফুলকপির আবাদ করানো হয়। ভৈরবের কৃষিতে এটি একটি নতুন সংযোজন। পরীক্ষামূলকভাবে এই সবজির প্রদর্শনী আবাদ করানো হয়েছিল। সফলতা আসায় আগামীতে এ অঞ্চলে এই সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণের সবজিটি ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করানো হবে।
এই জমিতে ফলন ও বালায়নাশকের জন্য কোনো রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। প্রয়োগ করা হয়েছে জৈবসার এবং সেক্স ফেরোমন কৌটা। ফলে এটি একটি নিরাপদ সবজি। পুষ্টিগুণে দ্বিগুণ। ক্রেতা চাহিদা আর বাজারদরও বেশ ভালো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, প্রথমবারই এটির বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাহারি রঙের কারণে কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে। সাধারণ ফুলকপি প্রতিটি যেখানে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে এটি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০টাকায়, যা কৃষকদের বেশ আগ্রহ করে তুলেছে। এসব ফুলকপিতে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, এন্টিএক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন উপকারি পদার্থ থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।