খুলনা : শীতে ভরা মৌসূমেও খুলনায় বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল-ডাল, আটা থেকে শুরু করে মাছ-মাংসের দামও এখন আকাশচুম্বী। বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় কিছুদিন কমেছিল শাক-সবজির দাম। তবে কয়েকদিন ধরে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে মূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে মাছ। সাধারণ মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটানো মাছ এখন নিম্নবিত্ত শুধু নয় মধ্যবিত্তদেরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে মাছের এ অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরবরাহ কম থাকাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
মিস্ত্রীপাড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা শাহ আলম, করিম ও লাবলু জানান, বর্তমানে এক কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, গ্রাসকার্প ১৮০ টাকা, ভেটকি ৫০০ থেকে ৯০০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। দেশী টেংরা ৬০০ তেকে ৮০০ টাকা, কই মাছ ৬০০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ কখনো কখনো এক হাজার ২০০ টাকাও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মিসেস অনামিকা মোর্শেদ অনেকটা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এখন আর মাছ কেনার মতো অবস্থা নেই। যে কোনো এক প্রকারের (এক কেজি) মাছের দাম দিয়ে কয়েক কেজি মুরগি (পোল্ট্রি) কেনা যায়। তাই মাসে ৫/৬ দিন মাছ খাই। বাকি দিনগুলো সবজি আর মুরগি দিয়ে চালিয়ে নিতে হয়।
ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে একাধিক মাছ বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাগরে তেমন একটা মাছ পড়ে না। যা পাওয়া যায়, তার বড় অংশ রাজধানীতে চলে যায়। এরপর যা থাকে তাই দিয়ে চলে খুলনার ২৪টি বাজার।
সে কারণে কোরাল (ভেটকি), রিটা, আইড়, ভোলা, রূপচাঁদা, টুনা, ছুরি, লইট্টা, কংকন মাছ পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ক্রেতাদের। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছের চাহিদাও বেশ। টেংরা, পারশে, রুই, কাতলা মৃগেল, গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প মাছও বেশ বিক্রি হচ্ছে। তবে সব মাছের দামই এখন বাড়তি।
কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা বলেন, আড়তে এখন সামুদ্রিক মাছ তেমন আসছে না। জেলেরা সমুদ্রে অবস্থান করছেন, তারা ফিরলে বাজারে মাছ পাওয়া যাবে।
মিস্ত্রীপাড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা আসলাম বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৭০-৮০ টি ট্রাক সবজি নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। আর শীতের শেষ দিকে ক্ষেতের সবজিও কমে এসেছে। তাই সরবরাহ কম হওয়ায় বাজারে দাম বেশি।
সোনাডাঙ্গা পাইকারী বাজারে গিয়ে দেখা যায় সবজি প্রায় নেই বললেই চলে। যা আছে তার সব দামই বাড়তি। পাইকারী ও খুচরা বাজারে সকল প্রকার সবজির দামের ব্যবধান প্রায় দ্বিগুন। সবথেকে বেশি বেড়েছে কাঁচা ঝালের দাম।
গুরর মাংেসরে দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে ডিম ও মুরগীর দাম। ব্রয়লার মুরগী কেজিতে ২৪/৩০ টাকা বেড়েছে। আর ডিমের দাম হালিতে ৪/৬ টাকা বেড়েছে।