রবিউল ইসলাম মিটু, যশোর: যশোর শহরের রায়পাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করায় সন্ত্রাসীরা যশোর জেনারেল হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে। এসময় আহত যুবকের ভর্তিকারী বাবু প্রতিপক্ষের মারপিটে ও বোমার বিস্ফোরণে আহত হয়েছে। তাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে বোমা হামলার বিকট শব্দে রোগী, রোগীর স্বজন, ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। চাঁচড়া রায়পাড়া ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। পুলিশ রায়পাড়া থেকে একটি ধারালো অস্ত্র, একটি তাজা বোমা ও উভয় স্থান থেকে বিস্ফোরিত অংশ বিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। রায়পাড়া বোমা হামলায় জাহেদা খাতুন নামে এক মহিলা আহত হয়েছে। তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও চাঁচড়া পুলিশ ফাঁসির ইনচার্জ সৈয়দ বায়েজিদ হোসেন জানান, চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকায় মাদক বিক্রি ও আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সজল ও আলামিন গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকাল ৪টার দিকে আলআমিন তার সহযোগি বাপ্পি ওরফে ভোমর বাপ্পি, সোহান, বাবু, শাওন, কটকে ও কুদরত লোকজন নিয়ে রায়পাড়ার মাদ্রাসা রোডের বাইলেনে সজলের ওপর বোমা হামলা। সজল পালিয়ে যেয়ে তার সহযোগিদের নিয়ে আলআমিন গ্রুপের উপর হামলা চালায়। আলআমিন গ্রুপ সজলকে উপর্যুপরি ছুরিতাঘাত করে। এসময় সজলের হাত, পা মারাত্মক জখম হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা পর পর দুটি বোমা হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে সজলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সজলের সহযোগী বাবু তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো অস্ত্র, একটি তাজা বোমা এবং বিস্ফোরিত বোমার অংশবিশেষ উদ্ধার করে। একই সাথে বোমা হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রায়পাড়ার এলাকার নুর ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম মন্টুকে আটক করে। আহত সজল একই এলাকার ইসরাইল ড্রাইভারের ছেলে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ আহত সজলকে সার্জারি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়।
সজল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে শুনে তার প্রতিপক্ষরা সোয়া ৫টার দিকে হাসপাতালে আসে। এসময় সজলকে উদ্ধারকারী বাবুকে মারার জন্য আক্রমন চালায়। বাবু প্রশাসনিক ভবনের উপরে উঠতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারপিট করে। বাবু সেখান থেকে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা সিড়িতে বোমা নিক্ষেপ করে। হাসপাতালের ডিউটিরত পুলিশের হাবিলদার আরিফ হোসেন বাবুকে উদ্ধার করে জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়।
বোমা নিক্ষেপের সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। এতে রুগী, রোগীর স্বজন, ডাক্তার, নার্স ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তারা দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। কোতয়ালি থানার এসআই মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে বিস্ফোরিত বোমার অংশবিশেষ উদ্ধার করেন।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত সজলের অবস্থা আশংকামুক্ত।
চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ সৈয়দ বায়েজিদ হোসেন বলেন, চাঁচড়া রায়পাড়ায় মাদক বিক্রি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি, একটি তাজা বোমা ও বিস্ফোরিত বোমার অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি গভীর ভাবে খতিয়ে দেখছে।
কোতয়ালী থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে বিস্ফোরিত অংশ বিশেষ উদ্ধার করেছি। যারা হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে তাদেরকে আটকের জন্য অভিযান চলছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কামরুল ইসলাম বেণু বলেন, হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। আমি এখন ঢাকায় আছি। এর চেয়ে কিছুই বলতে পারবো না।