বটিয়াঘাটা অফিস : রাত পোহালেই খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। শেষ মুহূর্তে এসে প্রচার প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সাত ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড। উপজেলা পরিষদ মাঠে তৈরী হয়েছে নৌকার আদলে বিশাল মঞ্ছ। কে হবেন আগামী দিনের কর্ণধর এনিয়ে আলোচনার শেষ নেই। নিরবে নিভৃতে এবং পরিকল্পিত ভাবে এক প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যকে ইমেজশুন্য করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে স্মরণ কালের সর্ব বৃহৎ তোড়জোড় এখন শেষ পর্যায়ে এসেছে। অভিজ্ঞ মিস্ত্রী দ্বারা ১০০ হাত দৈর্ঘ্য এবং ৩০ হাত প্রস্থের নৌকা তৈরীর কাজও শেষ। বিভিন্ন কাপড়ে নৌকা মঞ্চ এখন প্রস্তুত। সম্মেলন সার্থক করে তুলতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। মোট ৮টি সম্মেলন প্রস্তুত উপকমিটি রাতে দিনে কাজ করে চলেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খান এবং সাধারণ সম্পাদক দিলিপ হালদারের নেতৃত্বে উপজেলার অর্ধ সহস্রাধিক নেতাকর্মী সর্বদা সহযোগিতা করে চলেছেন। সম্মেলনে উপস্থিতি ঘটবে প্রায় ২০ হাজার নারী এবং প্রায় ৩৫ হাজার পুরুষ নেতাকর্মীর। সম্মেলনের পূর্ণতা দিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি আশা করছেন উপজেলাবাসী। ২০ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের দিন ধার্য ছিল। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সম্মেলনের দিন পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি করা হয়।
বটিয়াঘাটার ৭টি ইউনিয়নে ৬৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। ২০১৫ সালের সম্মেলনের পর উপজেলার ৭ ইনিয়নের ৬টিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। শুধুমাত্র ভান্ডারকোট ইউনিয়ন চলছে আহবায়ক কমিটি দিয়ে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এসএম ফরিদ রানা বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মাঝে ব্যপক উৎসাহ উদ্দিপনা বিরাজ করছে। তিনি আশা করেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে দুর্দিনের নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন হবে। বিশেষ করে ছাত্র লীগের সাবেক নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান একজন কর্মীবান্ধব নেতা। উপজেলার সর্বত্রই তার পদচারণা। তিনি সকল কর্মীদের নাম জানেন, সুতরাং তার বিকল্প কেউ নেই। তার এ জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সুক্ষ পরিকল্পনার মাধমে তাকে ইমেজশুন্য করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক দিলিপ হালদার একজন বিনয়ী সৎ এবং স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তি, সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তাই আগামী সম্মেলনে তাদের দুজনের বাইরে কাউকে কর্মীরা ভাবছে না।
দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক বেশী বলে দলের নেতা কমীরা মনে করেন। তারা মনে করছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে উপযুক্ত প্রার্থীর আবির্ভাব এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঘটতে পারে। ২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি বটিয়াঘাটায় সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আশরাফুল আলম খান সভাপতি এবং দিলিপ হালদার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। উপজেলার সাত ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডের নেতা কর্মীরা মনে করেন এবার সম্মেলনেও সভাপতি পদে আশরাফুল আলম খানের কোন বিকল্প নেই। তবে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দিলিপ হালদার ছাড়াও জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস এমপি এর ছেলে সদর ইউপি চেয়ারম্যান পল্লব বিশ্বাস রিটুরও নাম শোনা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, সে ক্ষেত্রে যদি উর্ধতন নেতৃবৃন্দ কোন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসতে পারেন। তানাহলে গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে দিলিপ হালদারের বিকল্প অন্য কেউ থাকবে না। সব মিলিয়ে এবারের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলার সর্বত্রই আনন্দো উল্লাস বিরাজ করছে। নেতাদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার পেনায় উপজেলার রাস্তাঘাট ছেয়ে গেছে। সম্মেলন উৎসবের ঢেউ যেন শহরে যেয়েও আঁচড়ে পড়ছে।
উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ হালদার বলেন, সম্মেলন সফল করতে আমরা সর্বপ্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে ৮টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। কাউন্সিলর-ডেলিগেট নির্ধারণ করতে ইউনিয়ন কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি এখন এক প্রকার সম্পন্ন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খান বলেন, এবারের সম্মেলন হবে বটিয়াঘাটার ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট। এ সম্মেলন রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমরা সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি।