আমন মৌসুমে এক ছটাকও ধান সংগ্রহ হয়নি ফুলতলায় খাদ্য গুদামে চালেও ব্যর্থ

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-০৪ - ১৮:১০

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// খুলনার ফুলতলা সরকারি খাদ্য গুদামে চলতি আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৮০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের টার্গেট থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ হয়নি। এছাড়া বরাদ্দকৃত ৩ হাজার ৩শ’ ৭৯ মেট্রিক চালের মধ্যে মিলারদের নিকট থেকে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ চাল সংগ্রহ হয়।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান গত ১৭ নভেম্বর ২০২২ থেকে শুরু হয়ে তা চলে ২৮ ফেব্রæয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত । উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ধানের কেজি প্রতি ২৮ টাকা দরে সরাসরি ৮০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া চাল সংগ্রহের জন্য মোট ৯টি রাইস মিলকে কেজি প্রতি ৪২ টাকা দরে ৩ হাজার ৩শ’ ৭৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মিলাররা মাত্র ১ হাজার ৩শ’ ৪৬ মেট্রিক টন চাল সরকরাহ করলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাকি থাকে ২ হাজার ৩০মেট্রিক টন চাল।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, খাদ্য গুদামের সাথে আমন মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ৪টি অটো রাইচ মিল ও ৫টি হ্যাংকিং মিল। অটো রাইচ মিলের মধ্যে জয়তুন অটো রাইচ মিল ও মাহাবুব ব্রাদার্স। জয়তুন বরাদ্ধ পেয়েছে ২ হাজার ৮শ’ ২২ মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করেছে মাত্র ৯শ’ ৮৫ মেট্রিক টন চাল। মাহাবুব ব্রাদার্স বরাদ্দ পেয়েছে ৪শ’ ৬০ মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করেছে মাত্র ২শ’ ৬৪ মেট্রিক টন চাল। ৫টি হ্যাংকিং মিল বরাদ্ধ পেয়েছে ৯৭ মেট্রিক টন চাল। এরাও টার্গেট পুরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই সাথে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ৮০ মেট্রিক টন ধানের মধ্যে কোন ধানই সরবরাহ করতে পারেনি।

এ বছর ধান ও চালের মূল্য অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় মিলাররা ও কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান চাল সরবরাহে নারাজ। বর্তমানে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করলে টন প্রতি ৭ হাজার টাকা লোকসান হয় বলে মিল মালিকদের দাবি। বাজারে ধানের মূল্য বেশি থাকায় কোন কৃষকই সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে আসেনি। অপরদিকে কৃষি অফিস জানায়, এ বছর আমনের ফলন ভাল হয়েছে। তবে একদিকে উৎপাদন খরচ বেশি অপরদিকে বাজারে ধানের মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা সেদিকেই ঝুকে পড়ে।

এ ব্যাপারে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাশেদ আহমেদ জানান, সারাদেশের মতোই ফুলতলার বাজারেও ধান চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা লোকসানের কথা ভেবে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান চাল দিতে আসেনি। এ কারণেই ধান-চাল ক্রয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।