মনিরামপুরের টিকটক সুমন এখন পশু হত্যা সিন্ডিকেটের হোতা

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-১১ - ১২:৫০

মনিরামপুর প্রতিনিধি : নাম তার সুমন তানভীর (২৫)। পিতা আলাউদ্দিন গাজী একজন ট্রাক চালক। মা শিরিনা বেগম গৃহকর্মী। আদিবাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার মহাকাল গ্রামে হলেও পিতা-মাতার সাথে এখন মনিরামপুর পৌরশহরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় বসবাস করছে। সেই কিশোর বয়স থেকে সুমন বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে সমাজে নিজেকে ফেরিওয়ালা, কখনও জীনের বাদশা, আবার কখনও টিকটক ভিডিও তারকা পরিচয় দিয়ে সহজসরল মানুষের সাথে প্রতারণা করে অর্থকড়ি হাতিয়ে নিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে শিশু ধর্ষনের অভিযোগ। থানায় মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিশোর অপরাধী থেকে বহুরূপী সুমন তানভীর এখন হয়ে উঠেছে পশু হত্যা সিন্ডিকেটের অপ্রতিরোধ্য নেতা। গোপনে গোখাদ্যের সাথে গ্যাস ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ মিশিয়ে দেয় সে ও তার দলবল। পরে ওই খাদ্য খেয়ে যখন গরু-ছাগল মারা যায়, তখন সুমন ও তার দলবল ফেলে দেওয়ার কথা বলে মরা গরু-ছাগল নিয়ে নাম কাওয়াস্তে জবাই দিয়ে মাংস বিক্রি করে আসছে। অভিযোগ রয়েছে সুমন ও তার দলবলের বিষ মিশ্রিত খাদ্য খেয়ে পৌরশহরের গাংড়া এলাকায় গত ১৫ দিনে অন্তত: সাতটি গরু পাঁচটি ছাগল মারা গেছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে জনমনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সুমন সাতবছর আগে খেলনা সামগ্রী ফেরি করে বিক্রি করতে গিয়ে মাছনা গ্রামের পঞ্চম শ্রেনির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। বেশ কয়েকমাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। সে মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পৌরশহরের গাংড়া মোল্যাপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে সুমনের পিতা-মাতা। অন্যদিকে সুমন অন্য এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একা বসবাস করে। গতবছর উত্তরমাথা মাইক্রোস্ট্যান্ডে মাকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় আস্তানা গড়ে তোলে সুমন। ওই বাসায় একটি সাপ নিয়ে সুমন নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে রিতিমত কবিরাজি শুরু করে। বিষয়টি প্রচার হলে বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য নারী-পুরুষের ভীড় জমে তার বাসায়। দুরদুরান্ত থেকে বিশেষ করে নারীরা নজরানা (টাকা) দিয়ে তেল ও পানি পড়া নিতে শুরু করে সুমনের কাছ থেকে। বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশ ওই সাপটি মেরে আস্তানা গুড়িয়ে দেয়।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সুমন দাস জানান, সুমন সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা ঠেকাতে এলাকার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এ দিকে অভিযোগ রয়েছে সুমন ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কার্যত কোন ভূমিকা রাখেনি।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, সুমনও তার দলবলকে আটকের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে অচিরেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।