ইউনিক ডেস্ক : পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর খুলনার বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর ক্রেতারা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক আপরোপের পর এখনও বাজারে সেই পেঁয়াজ আসেইনি। অথচ শুল্কের খবরে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের মনিটরিং করা প্রয়োজন। দাম বাড়ানোর বিষয়ে দ্রুতই অভিযানে নামবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আজ বাজার ও আকারভেদে ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অথচ একদিন আগে শনিবার (১৯ আগস্ট) দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতদিন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কোনো শুল্ক দিতে হতো না বাংলাদেশকে। গতকাল হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় দেশটি। দেশটির বাজারে পেঁয়াজের দামের নাগাল টানতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানানো হয়। রোববার থেকে এটি কার্যকর হয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের ব্যবসায়ী শাহাজামাল বলেন, শুল্ক বেড়েছে এই খবরেই আড়ৎদাররা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমাদেরও বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। শনিবার দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ সেই পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। গতকাল ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি।
তিনি বলেন, শুল্ক আরোপের পর এখনও সেই পেঁয়াজ বাজারে আসেনি। অথচ পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে।
একই বাজারের ব্যবসায়ী সুজন ও কাওসার বলেন, আড়তে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। তবুও আজ পেঁয়াজ বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশিতে পেঁয়াজ কিনেছি। ফলে বাড়তি দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।
দৌলতপুর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা হৃদয় বলেন, এখন পর্যন্ত বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। আমদানি স্বাভাবিক আছে। ভারতীয় শুল্ক বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম কিছুটা বেড়েছে।
বয়রা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা লাল মিয়া বলেন, পেঁয়াজ আজ বেশি দামে কিনতে হয়েছে। বাজারে সরবরাহ মোটামুটি আছে। তবে ২-১ দিনের মধ্যে দাম আরও বাড়তে পারে।
বয়রা বাজারে আসা ক্রেতা মেঘলা ব্যানার্জী বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমদানি শুল্কের অজুহাতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ মজুদ হতে পারে। ফলে দাম আরও বেড়ে যাবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের দেখা প্রয়োজন।
রূপসা উপজেলার বিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার রূপসার শেনেরবাজার থেকে দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজিতে কিনেছি। আজ শহরে এসে শুনি দেশি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজের শুল্ক বাড়ানোর পর পেঁয়াজ এখনো খুলনার বাজারে আসেনি। অথচ দাম বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরদারি করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে এমন সংবাদ আমরা শুনেছি। কয়েকজন বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে। এ বিষয়টি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। সোমবার থেকে বাজার অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।