নিজস্ব প্রতিবেদক: হিরো নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির হেড অফ প্লান্ট অপারেশন্সের বিরুদ্ধে অর্থ পাঁচার, হুন্ডি ব্যবসা, মুসলমানদের চাকুরিচ্যুত, নারী কেলেঙ্কারীসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে খুলনা এবং যশোরের শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন একজন ভুক্তভোগি। নাম তার বিজয় কুমার মহাজন। তবে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে সে লাপাত্তা। সে ভারতের দিল্লির বাসিন্দা। চাকুরির সুবাদে তিন বছরের জন্য বাংলাদেশে এসে জড়িয়ে পড়েন অবৈধ ব্যবসায়। হিরো নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির সিএফও বিজয় কুমার মন্ডলের সহায়তায় হুন্ডির ব্যবসা করতেন বিজয় কুমার মহাজন বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। অভিযোগ সূত্রে, হিরো নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির হেড অফ প্লান্ট অপারেশন্স পদে বিজয় কুমার মহাজন যোগ দেন ২০১৫ সালে। অস্থায়ী তিন বছরের চুক্তিতে যোগদান করলেও কোম্পানি চুক্তি নবায়ন করেছে ২০১৮ সালে এবং ২০২২ সালে। কিন্তু ২০২১ সালের পর থেকে ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় সে ট্যুরিষ্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসতো। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে দিল্লিতে যেয়ে ১০/১৫ দিন থেকে আবার ট্যুরিষ্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসতো। তার সাথে বিভিন্ন ব্যবসায়িক মহলের ভালো সম্পর্ক হওয়ার সুবাদে এক পর্যায়ে বিজয় কুমার মহাজন হুন্ডি ব্যবসা শুরু করেন। তার বিভিন্ন এজেন্ট এবং লোকের মারফত হুন্ডি ব্যবসা করছেন। এমনকি কর ফাঁকি দিতে তিনি হুন্ডিতে টাকা লেনদেন করতেন। স্যালারি কম দেখিয়ে ট্যাক্সও ফাঁকি দিয়েছেন। স্ক্রাপের মালামাল অবৈধভাবে বিক্রয় করেছেন অহরহ। অন্য একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইসলাম বিদ্বেশী লোক হওয়ায় বিজয় কুমার মহাজন মুসলমান কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের নামাজ পড়া এবং দাড়ি রাখাতে বাধা দিতেন। বেশ কয়েকজন তার মানষিক টর্চারের শিকার হয়ে চাকুরীও ছেড়ে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, বিজয় কুমার মহাজন একজন পাওয়ারফুল ইন্ডিয়ান ছিলেন। বিভিন্ন মহলে তার ওঠা—বসা ছিলো। ২০১৫ সালে তিনি বিজয় নিটল কোম্পানির মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। তার চাকুরীর মেয়াদ বাড়িয়ে প্রায় ৯ বছর বাংলাদেশে থেকেছেন। কিন্তু তার অনিয়মের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে একজন কর্মচারী মামলাও করেছেন। সে হুন্ডি ব্যবসাসহ অনেক আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলেও কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করেননি। ম্যানেজমেন্ট তার প্রতি সবসময় দূর্বল ছিলো । এমনকি ২০২০ সালে তার নারী ঘটিত একটি বিষয় ধামাচাঁপা দিতে কোম্পানি অন্য একজনকে চাকুরিচ্যুত করে। এ নিয়ে যশোরের একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। এদিকে, ৫ই আগষ্ট সরকার পতনের পর বিজয় কুমার মহাজন বাংলাদেশে আর ফেরেননি বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভুগি একজন কর্মকর্তা জানান, মহাজন ও কোম্পানির সিএফও বিজয় কুমার মন্ডল টাকা পাঁচারের সাথে জড়িত। বিভিন্ন ব্যবসায়িক পার্টিদের মাধ্যমে অর্থ পাঁচার করে অনেক টাকা রাজস্বের ক্ষতি করেছে। কোম্পানিতে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মকর্তা শাহাদাত, ডাক্তার মশিউর, নাফিজের মাধ্যমে বিভিন্ন অবৈধ কাজ হতো মহাজন থাকাকালীন সময়ে। এ বিষয়ে হিরো নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুসাব্বির নিটলের মুঠোফেনে কথা বলার জন্য কল করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।