রাবি প্রতিনিধি : অবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) কার্যকরের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে অব্যাহত আন্দোলনের শপথ গ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই মোমবাতি প্রজ্জলন ও শপথ গ্রহণ কর্মসূচী পালন করেন শিক্ষার্থীরা। দাবী না আদায় হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাবে বলে জানায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এসময় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকি বলেন, ২৭ বছর ধরে আমরা অভিভাবকহীন। রাবি শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলার কেউ নেই। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি প্রশাসনকে জানাতে পারছি না। ক্যাম্পাস এখন নিরাপত্তার অভাবসহ নানা রকম সমস্যায় জর্জড়িত। অথচ ’৭৩ অ্যাক্ট অনুযায়ী আমাদের এই দাবি দাওয়া নিয়ে কাজ করার কথা রাকসু প্রতিনিধিদের। কিন্তু গত ২৭ বছর ধরে রাকসু অচল। এখন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক সংগঠন বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের প্রাণের দাবিকে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তাই আমরা রাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরাই নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রশিদ রফিকের সঞ্চলনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি অতীতে ছাত্র সংসদ ছিল। জাতীয় আন্দোলন গুলোতে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু এখন রাকসু সহ দেশের কোন ছাত্র সংসদ সচল নেই। রাকসু না থাকার ফলেই আমাদের বাসের ট্রিপ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে, ডাইনিংয়ে খাবারের মান না বাড়িয়ে দাম বাড়ানো হয়, লাইব্রেরির সময় কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উপাচার্য স্যার বলেছেন তিনি নির্বাচন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু তারপরও নির্বাচন হচ্ছেনা কেন আমরা জানিনা। রাকসু আমাদের অধিকার, রাবির প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ন্যায্য অধিকার। অবিলম্বে রাকসু সচল করতে হবে। যতদিন না রাকসু কার্যকর করা হয়, ততদিন আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এরপর শহীদ মিনারের বেদীতে দাঁড়িয়ে মোমবাতি হাতে শপথ গ্রহণ করেন বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। শপথ বাক্য পাঠ করান ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকি। রাকসু সচলের দাবিতে আগামী ১৫ ডিসেম্বর গণস্বাক্ষর কর্মসূচী শুরু হবে বলে শপথ গ্রহণ শেষে জানানো হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা এই শপথটি পাঠ করেন- ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য রাকসুর কোনো বিকল্প নেই। রাকসু সচল করার দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। রাকসু সচল না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমাদের এই ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা প্রশাসনের সাথে কোন ধরনের আপোষে যাবো না এবং কোন সংগঠনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে এই আন্দোলনকে বাঞ্চাল করার কোন ধরনের হীন চেষ্টা করব না। কেউ করলে তা প্রতিহত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করব। এই আন্দোলনে যত ধরনের বাধা বিপত্তিই আসুন না কেন, আমরা তা সাহসিকতার সাথে প্রতিহত করাসহ আন্দোলনকে সফল করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শিক্ষার্থীদের বৃহৎস্বার্থ রক্ষার্থে আমরা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জনে সদা প্রস্তুত থাকবো। আন্দোলন সফল হোক, শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক, ছাত্র সমাজের জয় হোক।’