উদ্ধার হয়নি সবুজের লাশ 

প্রকাশঃ ২০১৭-১২-২৬ - ১১:৫৪

৩ আসামির স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান : ৪ জনের রিমান্ড আবেদন

খুলনা : খুলনা থেকে কৌশলে সন্ত্রাসীরা মারপিট করে মোড়লগঞ্জের পানগুছি নদীতে ফেলা নিখোজ মোঃ কামরুজ্জামান ওরফে সবুজ এর সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তাকে উদ্ধারের জন্য মোড়লগঞ্জে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম নদীতে তল্লাশী চালায়। এদিকে এ ঘটনার সাথে জড়িত আটক ৭ আসামির মধ্যে ৩ জনে ১৬৪ জবানবন্দী প্রদান করেছেন। গতকাল সোমবার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে ১৬৪ নেয়া হয়। এরা হচ্ছেন ওয়াহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ, হাফিজুর রহমান ও হাসিব। বাকী ৪ জনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, আটক ৭ আসামির মধ্যে ৩ জনের ১৬৪ জবানবন্দী প্রদান চলছে। বাকী ৪ জনকে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
মোড়লগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ হায়দার আলী আকন সোমবার রাত সোয়া ৯টায় এ প্রতিবেদককে বলেন, নিখোজ সবুজের লাশ উদ্ধারের জন্য সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যায় পর্যন্ত নদীতে ডুবুরি দিয়ে তল্লাশী চালানো হয়। মোড়লগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে ৫-৬ কিলোমিটার এড়িয়ে নিয়ে বলেশ্বর নদীর সাগরের কাছাকাছি পর্যন্ত তল্লাশী চালানো হয়েছে। এ সময় নিখোজের ভাই মোক্তারসহ আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন। তিন দিন অতিবাহিত হলেও তার লাশ খুজে পাওয়া যায়নি। আমরা আশাকরছি আজ মঙ্গলবার হয়তো পুনরায় অভিযানে সবুজের লাশ পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে বিজ্ঞ বিচারক শাহিদুল ইসলাম এর কাছে মামলার ৩ আসামীর ১৬৪ স্বীকারোক্তি জবানবন্দী প্রদান করেন। আসামিরা হচ্ছেন ওয়াহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ, হাফিজুর রহমান ও হাসিব। এছাড়া অপর আসামিরা ৪ জনের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী বুধবার ২৭ ডিসেম্বর রিমান্ড শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। এর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ৩ আসামির আদালতে ১৬৪ প্রক্রিয়া চলছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জেল্লাল হোসেন বলেন, মামলার আটক ৭ আসামির মধ্যে ৩ জনে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। এরা হচ্ছেন  ওয়াহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ, হাফিজুর রহমান ও হাসিব। মামলার বাকি আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আদালতে আবেদন জানিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। আগামী ২৭ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে আদালতে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
নিখোজের বড় ভাই মনিরুজ্জামান মোক্তার সোমবার রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, তার ভাই সবুজকে নদী থেকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস নেতৃত্বে ডুবুরি দল তার ভাইকে খুজে পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার আবারও তল্লাশী চালানো হবে।

মামলার আসামিরা হচ্ছে অহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ (২১), হাফিজুল ইসলাম (১৯), মোঃ মাহমুদ (১৯), মোঃ হাসিব হাওলাদার (১৯), হাছিব হাওলাদা-(২) (১৮), মোঃ হাফিজুর রহমান (১৯) ও সাইফুল ইসলাম (২০)।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ১১ থেকে সাড়ে ১১টার দিকে একটি ট্রলারে করে সন্ন্যাসী এলাকায় যাবার সময় সবুজ ও তার বন্ধু খুলনা কেডিএ’র সার্ভেয়ার সামছুল আরেফিন ওরফে রনি (৩৪) কে মারপিট করে নদীতে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। ওই সময় রনি স্থানীয় ট্রলার চালকরা তাকে উদ্ধার করলেও সবুজকে উদ্ধার করতে পারেনি।
ওই দিন রাতে রনি ও সবুজের সাথে থাকা ৭ জনকে ইন্দুরকানি থানা পুলিশ আটক করেন। এরা হলো, ওহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ (২১), হাফিজুল ইসলাম (১৯), মোঃ মাহামুদ (১৯), মোঃ হাসিব হাওলাদার (১৯), হাছিব হাওলাদার (১৮), মোঃ হাফিজুর রহমান (১৯) ও সাইফুল ইসলাম (২০)। এ ঘটনায় রনি’র মামা আওয়ামী লীগ নেতা মল্লিক আবিদ হোসেন বাদী হয়ে রোববার বিকেলে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।