সেলিম হায়দার : নতুন শিক্ষা বর্ষকে সামনে রেখে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তালায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বাধ্যতামূলক আবারো গুঁজে দিতে যাচ্ছে নিষিদ্ধ গাইড বই। এজন্য বিভিন্ন প্রকাশণীর পক্ষে জোর অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাদের এ কর্মকান্ডে সমন্বয়কারী হিসেবে বরাবরের মত থাকছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক নেতারাই। ইতোমধ্যে তারা তৃণমূলের বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে জেলা সদরে বৈঠকও করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে নির্ভর যোগ্য একাধিক সূত্র।
অভিযোগে জানাগেছে যে,নতুন শিক্ষা বর্ষে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ৬৯ টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে অবৈধ গাইড বই তালিকাভুক্ত করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকাশণী প্রতিষ্ঠানের সাথে জোর লবিং শুরু করেছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাথে বরাবরের মত এবারো তারা চুক্তি করতে যাচ্ছে মোটা অংকের টাকায়। সৃজণশীল শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকার সব ধরণের গাইড বই নিষিদ্ধ করলেও তালায় তা এক দিনের জন্য হলেও বন্ধ হয়নি। শুধু ধরণ বদলেছে মাত্র। আগে প্রতিটি স্কুল থেকে প্রকাশ্যে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বুক লিষ্ট বা বই এর তালিকা দেওয়া হত আর এখন তা চুপিসারে শ্রেণী শিক্ষকদের মাধ্যমে অলিখিতভাবে সরবরাহ করা হয়। এজন্য প্রতি বছর শিক্ষকদের প্রলুব্ধ করতে প্রকাশনা কর্তৃপ শিক নেতাদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় বিভিন্ন শিকদের মাঝে নগদ অর্থ সহ বিভিন্ন সুবিধা পৌছে দিচ্ছেন বলে জানাগেছে।
সূত্র জানায়,তালা উপজেলা এলাকায় মূলত পপি,পাঞ্জেরী,দিক দর্শণ,লেকচার,অনুপম,আদিল সহ বিভিন্ন প্রকাশণীর গাইড বই চালানো হয়। এবারো বরাবরের মত প্রকাশণী গুলোর পক্ষ থেকে শিক্ষক নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লাইব্রেরী বা বই দোকানিরা জানান, ইতোমধ্যে শিক্ষকদের পক্ষে তাদের নির্দিষ্ট বই উঠাতে বলা হয়েছে। সূত্র জানায়,প্রায় প্রতিটি প্রকাশণীর প্রকাশিত বইয়ের লেখকদের স্থলে নাম পরিবর্তন করেই চালানো হয়ে থাকে। তাছাড়া সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সৃজনশীল ব্যবস্থাকে দেরীতে হলেও স্বাগত জানায় শিক্ষাবিদরা। তবে মূল সমস্যা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে সচেতন অভিভাবক মহল। তাদের মতে পূর্বের ন্যায় গাইড বই ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সেই পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। তাই উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখতে গাইড বই সংক্রান্ত নীতিমালা বা আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
এব্যাপারে সোমবার বিকাল বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির তালা শাখার সভাপতি আনন্দ মোহন হালদারের প্রতিক্রিয়া জানতে চায়লে তিনি বলেন, গাইড বই সস্পর্কে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
এব্যাপারে সাধারণ সম্পাদক মুকুন্দ কুমারের মোবাইলে বারংবার চেষ্টা করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
এব্যাপারে তালা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আতিয়ার রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন,নিষিদ্ধ গাইড বই নিয়ে তাদের জেলা পর্যায়ে সভা হয়েছে। সেখানে নির্দিষ্ট কোন প্রকাশণীর পাঠ্য পুস্তক তালিকা ভুক্তির ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা জানান,নি¤œমাণের বই’র সম্পৃক্ততায় কোমলমতিদের মেধাকেও অলিখিতভাবে সংকুচিত রাখা হয়। বেঁধে ফেলা হয় নির্দিষ্ট গন্ডিবিধির মধ্যে। এ কারণে তারা অংকুরে কিছু শিখতে না পেরে পরীক্ষায় মুখস্থ বিদ্যার সাথে প্রশ্নের খাপ খাওয়াতে না পেরে আশ্রয় নেয় নকলের।