খুলনা : খুলনায় পুলিশের বিরুদ্ধে দু’চোখ উৎপাটনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে আসামিদের অব্যাহত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্ধ শাহ জালাল এবং তার পরিবারের সদস্যরা। এজাহারভূক্ত আসামি খালিশপুর থানার ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের থানা থেকে প্রত্যাহার না করায় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অর্থের প্রলোভনও দেখানো হচ্ছে। যে কোন সময় আসামিরা জীবন নাশসহ তাদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। একই সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র তদন্ত রিপোর্টও দ্রুত দাখিল এবং ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্ধ শাহ জালালের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান এ্যাড. ইশ্বর চন্দ্র সানা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মামলার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এজাহারভূক্ত আসামি খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম খানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের থানা থেকে প্রত্যাহার করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যাহার না করায় মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিতকরণ ও তদন্ত প্রভাবিত করা এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রতি নিয়ত তারা অপচেস্টা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া নাসিম খান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য অর্থের প্রলোভনও দেখাচ্ছে। কিন্তু তাদের আর্থিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের চাপের কারণে পিবিআইও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে সময় ক্ষেপন করছে। এমনকি মামলা দায়েরের পর পুলিশের ইন্দনে শাহ জালালের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে দু’ চোখ হারানো যুবক শাহ জালাল বলেন, ওসি নাসিম খান এবং তার পুলিশ বাহিনী আর্থিক লালসার জন্য আমাকে পৃথিবীর আলো দেখা থেকে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত করেছে। আমার দু’টি চোখ উপড়ে ফেলে আমার ভবিষ্যৎ ধংস করেছে। চোখ হারিয়ে বর্তমানে আমি মানবেতর জীবন যাপন করছি। মামলা তুলে নিতে আসামিদের হুমকিতে পরিবার পরিজনসহ তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও জানান।
আসামিদের দ্রুত থানা থেকে প্রত্যাহার এবং দ্রুত পিবিআই’র তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও মহা পুলিশ পরিদর্শকসহ সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। এ সময় শাহ জালালের বাবা মো. জাকির হোসেন, মা রেনু বেগম এবং স্ত্রী ও শিশু সন্তান উপস্থিত ছিলেন।