রূপসা : মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতাদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন স্পটগুলি এখন মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। পুলিশের তৎপরতাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং উঠতি যুবক ও শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে বেপরোয়া ভাবে ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় মাদক আমদানি-রপ্তানি ও খুচরা বিক্রয় কার্যক্রম এখন প্রায় সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক দ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার করার পরেও দমন করা যাচ্ছেনা এদেরকে। জানাগেছে, রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে ইয়াবা ও গাজা বিক্রি হয় দীর্ঘদিন ধরে। এ অঞ্চলগুলোতে ছোটখাটো ভাবে যারা মাদক বিকিকিনি করে তাদের মধ্যে কেউ কেউ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও বড় ব্যবসায়ীরা রয়েছে অন্তরালে। উপজেলার শিয়ালী বাজারে ইয়াবা ও গাজা বিক্রি করে স্বরুপ, কাকন ও ভ্যান চালক বিধান বিশ্বাস। চাদপুরে মেজবা, রুঙ্গু, লিটন ইয়াবা বিক্রয় করে। কচাতলা বাজার এলাকায় বিক্রি করে দিপংকর ও নিখিল, সিন্দুরডাঙ্গা এলাকায় সুশীল, ঘাটভোগের মোড়ে লালন, হোসেন, আবুল, সোহাগ ও পারভেজ। তেমনি আলাইপুর ব্রীজের নিচে বড় ধরনের ইয়াবা ব্যবসা করে যুবলীগের সাবেক এক নেতা এবং খুচরা বিাক্র করে ভ্যান চালক আইনাল ও সোহাগ। আইচগাতী ইউনিয়নের সেনের বাজার চিনি মসজিদের সামনে ইনসানের স্ত্রী পারুল বেগম হেরোইন ও ইয়াবা, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সমীর কর্মকার ও শামীম ড্রাইভার ইয়াবা বিক্রি করে, কামার পাড়ায় হায়দার গাজা, মাসুম ও সজল ইয়াবা, পপুলার জুট প্রেসের সামনে সোহাগ ও নজরুল ইয়াবা ও গাজা বিক্রি করে। রাজাপুর এলাকায় জসিম গাজা ও ইয়াবা, রাজাপুর সোনাপুর কিন্ডার গার্টেনের সামনে ডুবুরি হাসান, হাতকাটা আলী গাজা ও ইয়াবা বিক্রি করে। মিলকি দেয়াড়ার বাগানবাড়ী এলাকায় লালু ও বাবু ইয়াবা ও গাজা, রাজাপুর জয়বাংলার মাঠ এলাকায় মান্নানের স্ত্রী রওশনারা ও তার পুত্র জাহাঙ্গীর ইয়াবা ও গাজা, তেলির মোড়ে মতির পুত্র সাইদ ইয়াবা, মিলকি দেওয়াড়ার একটি হোটেলে সোহরাব গাজা ও ইয়াবা বিক্রি করে। যুগিহাটি এলাকায় জনি ও আরমান ইয়াবা ও গাজা বিক্রি করে। চর রূপসা এলাকায় বড় ব্যবসায়ী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে জাহাঙ্গীর, তার স্ত্রী ও মাতা। সামন্তসেনা নতুনহাট এলাকায় দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে আলমগীর ও সোনা, নতুনকরে এ ব্যবসায় লিপ্ত হয়েছে কান্ত। শ্রীফলতলা ইউনিয়নে ইয়াবার এক চেটিয়া ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইমলাক ও গফফার। রূপসার সবচেয়ে বেশি মাদকের চালান আসে ঘাটভোগ ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে পুলিশের চোখকে ফাকি দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় এক প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি এবং অপরজন বর্তমান জনপ্রতিনিধি। জনশ্রুতি রয়েছে তারা খুলনা জেলার সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হওয়ায় তারা এমন ভাবে মাদক আমদানী রপ্তানী করে যে পুলিশ শত চেষ্টা করেও মাদক সহ তাদের গ্রেফতার করতে ব্যার্থ হচ্ছে। এ দিকে মাদকের করালগ্রাসে ৫ টি ইউনিয়নের স্কুল ও কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী যেমন বিভিন্ন ধরনের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে তেমনি বেকার যুবক-যুবতীরাও কোন না কোন ভাবে এ নেশার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। রূপসায় মাদকের অবাধ বিচরন সম্পর্কে রূপসা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, রূপসায় মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। গত কয়েক মাসে অর্ধশতাধিক মাদক বিক্রেতা গ্রেফতার হয়েছে। বড় ব্যবসায়ীদের ধরার জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। অপরদিকে- রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের কচাতলা বাজারে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকায় গা ঢাকা দিয়েছে মাদক ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। বর্তমানে পুলিশী অভিযান না থাকার কারনে মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে জনসাধরনের মাঝে হুমকি ধামকি দিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, সাংবাদিকদেরকেও প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করার পায়তারা চালাচ্ছে।