রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষের শরীরে এরইমধ্যে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে বলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষণায় উঠে এসেছে। সরকারের পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে কমতে শুরু করেছে সংক্রমণের তীব্রতা। কমছে মৃত্যুহারও। আসছে শীতের আগেই করোনাভাইরাসকে পুরোপুরি কাবু করতে পারবে বাংলাদেশ-এমন আশাও করছেন গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।
একটি পরিবারে সংক্রমণের শুরু হয়েছিলো বড় বোনকে দিয়ে। কয়েকদিনের মধ্যেই পরিবারের বাকি ১১ সদস্যও করোনাভাইরাসের লক্ষণ টের পান। তবে, সবাই সুস্থ হয়েছেন বড় কোন জটিলতা ছাড়াই।
বাংলাদেশে ভাইরাস শনাক্তের শুরুর দিকে, শঙ্কা ছিলো, ঘনবসতির বস্তিতে সংক্রমণ বিপর্যয় ডেকে আনবে করোনাভাইরাস। অথচ এখানে জীবন চলছে আগের মতোই। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই, সংক্রমণও নেই।
আসলেই কি নেই? নাকি, পরীক্ষা হয়নি,তাই শনাক্তও হয়নি। অনেকেই বলেছেন, জ্বর ছিলো, সাথে অন্য লক্ষণও। কিন্তু, তবু পরীক্ষাকে ঝামেলা মনে করে, দূরে থেকেছেন। আস্থা রেখেছেন ফার্মেসির ওষুধেই।
ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাস মোকাবেলার মোটামুটি দুটি পথ আছে। একটি, সংক্রমিত এলাকা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে দিয়ে এ জায়গাতেই ভাইরাসকে নির্মূল করা। আরেকটি বেশিরভাগ মানুষকে ভাইরাসের সংস্পর্শে এনে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করা।
যেহেতু বাংলাদেশে লকডাউন কোন জায়গাতেই কঠোরভাবে কার্যকর হয়নি, তাই দ্বিতীয় পথেই সফল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমন তথ্যই দিচ্ছে গণস্বাস্থ্যের গবেষণা। গবেষকরা বলছেন, রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষের শরীরে ইতিমধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আক্রান্তদের বেশিরভাগের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এমনকি পরিবারের দু’একজন সদস্য আক্রান্ত হলেও বাকি সদস্যদের সামান্য উপসর্গ হয়তো ছিলো। তবে, তাদের শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আবার অনেকেই জানেন না তাদের শরীর করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলো।
সংক্রমণ শনাক্তের চিত্র বলছে, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের চেয়ে বাংলাদেশে ভিন্ন আচরণ করেছে করোনাভাইরাস। সংক্রমণ বেড়েছে ধীরে ধীরে। চতুর্থ মাসে এসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে পঞ্চম মাসে এসে তীব্রতা হারাতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস।