চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের দশ কর্মচারীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অসহায় মহিলা; প্রধান বিচারপতির নিকট অভিযোগ

প্রকাশঃ ২০২১-০৩-২১ - ১১:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম আদালতের দশ কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির নিকট অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ার কালামিয়া এলাকার ছমুদা খাতুন নামের এক মহিলা।

জানা যায়, আদালতের কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছমুদা খাতুন ও তার আত্মীয় স্বনজনকে মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়ে তার সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগে গত ৪ মার্চ প্রধান বিচারপতির নিকট অভিযোগ করার কারণে বর্তমানে অসহায় মহিলার পরিবার আদালত কর্মচারীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতের ১. “স্টেনোগ্রাফার রাশেদ ইকবাল”, ২. “রেকর্ড কীপার প্রশান্ত কুমার দাশ”, ৩.“মানু কান্তি শর্মা”, ৪. মো: শোয়েব, ৫. মো: জাকারিয়া, ৬.“স্টেনোগ্রাফার মো: ফারুক”,৭.“স্টেনো-টাইপিস্ট ছাইফুল কাদের”, ৮.“ বেঞ্চ সহকারী মো: হারুন উর রশিদ”, ৯.“ প্রধান তুলনাকারক রাহমত উল্লাহ”, ১০. “বেঞ্চ সহকারী মো: বখতিয়ারসহ” দশ কর্মচারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এর মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি বরাবরে দায়ের করা ভুক্তভোগী ছমুদা খাতুনের অভিযোগে হুবহু তুলে ধরা হলে।
আদালতের ক্ষমতা ব্যবহার করিয়া জোর পূর্বক জমি দখল করার কাজে লিপ্ত রহিয়াছে। তাহারা আদালতের অসাধু ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী হওয়ায় অবৈধ টাকা ও আদালতের ক্ষমতার জোরে জরবদখলের মানসে জনৈক মো: মোস্তফার সহিত বিগত ০৩/১১/২০২০ইং তারিখ একটি রেজিস্টার্ড বায়নানামা সম্পাদন কওে (বায়না নম্বর ৩৭৭৪ এর কপি সংযুক্ত)। অথচ উক্ত বায়নার তপশীলে বর্ণিত সম্পত্তিটি বিগত ২৪/০৭/১৯৬৫ইং তারিখে রেজিস্টার্ড কবলামূলে ক্রয়কৃত আমার পৈত্রিক সম্পত্তি এবং উহা ভোগ দখলে রহিয়াছি যাহাতে একটি রিক্সা গ্যারেজ রহিয়াছে। গত ১৯/১২/২০ইং তারিখ আনুমানিক দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় আমাদের দখলীয় উক্ত জায়গায় ১০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনীসহ ২, ৫ ও ৯ নং ব্যক্তির উপস্থিতিতে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখাইয়া দেয়াল উঠাইবার চেষ্টা করে। উক্ত অবৈধ দখল কাজে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যগণ বাঁধা দিলে আমাদেরকে তারা মারধর করে এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকী প্রদান করিয়া বলে যে, ‘আমাদেরকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানো হইবে। আদালত না-কি তাহাদের নিয়ন্ত্রণে।’ উক্ত বিষয়ে আমি বিজ্ঞ এডিএম কোর্টে ১৪৫ ধারার বিধান মতে ফোজদারী মিস-১৬০৫/২০ নং মামলা দায়ের করিয়াছি। পরবর্তীতে তাহারা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করিয়া ৪নং বায়না গ্রহীতার পক্ষে বাদীর মাধ্যমে আমার ভাই- বোনসহ পরিবারের সদস্যদের নামে আদালত হইতে এফ.আই.আর করাইয়া জিআর – ৩৬/২১ [ বাকলিয়া ৩৬(১)২১] দায়ের করে ( কপি সংযুক্ত ) আমাদেরকে হয়রানি করিতেছে। উক্ত জায়গা ছাড়িয়া না দিলে আমাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের বিভিন্ন আদালতে আরও মামলা করিয়া হয়রানি করিবে এবং জোরপূর্বক জায়গা হইতে উচ্ছেদ করিবে বলিয়া বিভিন্ন মাধ্যমে জানাইতেছে।
অতএব মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, উক্ত বিষয়ে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহন করিতে সদয় মর্জি হয়। বিনীত নিবেদক (ছমুদা খাতুন) পিতা- মৃত হাজী আবদুল মোতালেব, সাং- বাকর বলির বাড়ি, কালামিয়া বাজার , থানা বাকলিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম। মোবাইল ০১৮২২৭০৪৮১৯।

সিএমএম আদালতের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেককে জানান মামলার তদবীর করে তারা প্রত্যেকে কোটি টাকার মালিক হয়েছে তাদের প্রত্যেকে নামে বেনামে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। তাদের হাজারো অপকর্ম ধামাচাপা রয়েছে। অসহায় মহিলা সাহস করে প্রধান বিচারপতির নিকট অভিযোগ করার করণে আদালত পাড়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ঝড় সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি অভিযোগকারী “ছমুদা খাতুন” প্রতিবেদককে বলেন আদালতের কর্মচারীদের ভয়ে প্রতিনিয়ত আতংকে রয়েছি, আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা তাদের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী ও পুলিশী ভয়ে পালিয়ে বাড়াচ্ছি । তাদের ক্ষমতার দাপটে থানার পুলিশ ও একটি সন্ত্রসীগ্রুপ আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকী দিচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমাদের পরিবারের সদস্যদের হামলার বিষয়ে আদালতের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শিঘ্রই মামলার করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে কিনা জানতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবরীর (০১৫৫২৩২২৯৪৬) মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সিএমএম আদালতে কর্মরত কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসহায় মহিলার জমি দখল ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিষয়ে জানতে আইন সচিবকে (০১৮১৪৭০৫৩১৭ ) নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।