ইউনিক প্রতিবেদক :
বাণীশান্তার তিনফসলি উর্বর জমিতে মোংলা বন্দর কর্তৃক পশুর নদী খননের বালি ফেলার সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইতিমধ্যেই খননকৃত বালি ফেলার কারনে চিলা এলাকার পশুর নদী পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা-স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। খননকৃত বালি দ্বারা পশুর নদীর অববাহিকার ব-দ্বীপ পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংস করছে এতে কোন সন্দেহ নেই। বাণীশান্তার তিনশো একর কৃষিজমিতে খননকৃত বালি ফেলার সিদ্ধান্ত’র বহু বিকল্প প্রস্তাব রয়েছে। তাই পশুর নদী খননের সমস্যা সমাধানের জন্য টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
শনিবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু ( ভিআইপি লাউঞ্জ ) মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাণীশান্তা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে ” পশুর নদী খননকৃত বালির কবল থেকে বাণীশান্তা ইউনিয়নের তিনশো একর তিনফসলি কৃষিজমি রক্ষায় করনীয়” শীর্ষক খুলনা সংলাপে বক্তারা একথা বলেন।
সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত খুলনা সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনার আহ্বায়ক এ্যাড. বাবুল হাওলাদার। সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। এছাড়া খুলনা সংলাপে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য এস এ রশিদ, খুলনা পরিবেশ মঞ্চ’র আহ্বায়ক এ্যাড. কুদরত-ই-খোদা, সাংবাদিক-গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দী, ক্লিন খুলনার প্রধান নির্বাহি হাসান মেহেদী, দাকোপ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান গৌরপদ বাছাড়, সাবেক ছাত্রনেতা পূর্ণেন্দু দে, বাসদ নেতা জনার্দন দত্ত নান্টু, ওয়ার্কার্স পাটির নেতা শেখ মহিদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টি ( মার্কসবাদী ) নেতা কমরেড মোজাম্মেল হক, সাংবাদিক এইচ এম আলাউদ্দিন, সিপিডি’র খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী ইকবাল হোসেন বিপ্লব, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক এস এম শাহনওয়াজ আলী, বাপা বাগেরহাট জেলার নেতা সৈয়দ মিজানুর রহমান, বাণীশান্তা ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায়, লাউডোব ইউপি চেয়ারম্যান শেখ যুবরাজ, কৃষক নেতা এ্যাড. রুহুল আমীন, কৃষক নেতা গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায়, ছাত্র ইউনিয়ন খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র সৌরভ, বাণীশান্তা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা সত্যজিৎ গাইন, বাণীশান্তা ইউপি সদস্য জয়দেব কুমার মানিক, হিরন্ময় মন্ডল, ইউপি সদস্য পাপিয়া মিস্ত্রি, উন্নয়নকর্মী মেরিনা যুথী, চিলা ইউনিয়ন কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা হুমায়ুন কবির প্রমূখ। সংলাপ সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর জাতীয় পরিষদ সদস্য মো. নূর আলম শেখ। প্রধান বক্তা বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন সরকারের মধ্যে ভালো-মন্দ লোক আছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বাণীশান্তার কৃষিজমিতে বালি ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। বাণীশান্তার সংখ্যালঘু মানুষের কৃষিজমিতে বালি ফেলললে সরকার আন্তর্জাতিক ভাবে সমালোচিত হবে। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক সংসদ ননী গোপাল মন্ডল বলেন বাণীশান্তার কৃষিজমিতে বালি ফেলার বিষয় জাতীয় সংসদে আলোচনা দরকার ছিলো। সংসদ সদস্য আছে পার্লামেন্ট আছে কিন্তু সংসদে আলোচনা হচ্ছে না। পশুর নদীর বালি ফেলার জন্যে বিকল্প জায়গা খুঁজতে হবে। প্রয়োজনে বন্দরকে আরো দক্ষিণে সরিয়ে নিতে হবে। বন্দর বড় না মানুষ বড়। আশার আলো বাণীশান্তার কৃষকদের পাশে রাজনৈতিক-মানবিক এবং পরিবেশবাদী সংগঠন দাড়িয়েছে। বাণীশান্তার সমস্যা জাতীয় ভাবে তুলে ধরার জন্যে বাপাকে ধন্যবাদ। সভাপতির বক্তব্যে বাপা খুলনার সমন্বয়কারী বাবুল হাওলাদার কৃষি এবং কৃষক বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।