শ্যামনগরে চলছে যত্রতত্র ভুগর্ভস্থ বালু উত্তোলন

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-০৭ - ১৩:৫৫

শ্যামনগর প্রতিনিধি : শ্যামনগরউপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র অবৈধভাবে ভুগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নিয়ম নীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করে সরকারি নদী, খাল ও জলাশয় থেকে এসব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিশেষ করে পানিউন্নয়ন বাধ সংলগ্ন এলাকায় বা কৃষি জমিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে তৈরি ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাত-দিন নিরবিচ্ছিন্ন বালু উত্তলন করা হয় বিভিন্ন এলাকায়। বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন পার্শ্ববর্তী রাস্তা ও জমিতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। তেমনি বিকট শব্দে স্থানীয় পরিবেশ-প্রতিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। বিরক্ত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে বেশিরভাগ এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় এসব বালু উত্তোলন হয়।

গত শনিবার দুপুরে শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের খুটিকা এলাকার রাস্তা সংলগ্ন বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মসজদের নিকটে বিলে ড্রেজার দিয়ে ভুগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়। বাইনতলা গ্রামের খোকন মেম্বার এই বালু উত্তোলন করছে বলে এলাকাবাসী জানান। বাইনতলা এলাকার এক ব্যক্তি জানান, নিকটস্থ ৩তলা স্কুল ভবনের নিকট থেকে বালু উত্তলোন করায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি কখন যে স্কুলটি দেবে মাটির নিচে চলে যায়।

এলাকাবাসী বলেন, এই ব্যাপারে আমরা সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামনগর, অতিরুক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব সাহেবকে জানিয়েছি কোন আইনগত ব্যবস্থা হয়নি। শুধু পদ্মপুকুর নয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এভাবে আইন অমান্য করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ভুগর্ভস্থ এসব বালু দিয়ে বেশিরবাগ ক্ষেত্রে নিচু জমি ভরাট করে উচু করা হচ্ছে। স্থান, এলাকা ও দূরত্ব ভেদে প্রতি ফুট বালু ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বালু বিক্রি থেকে প্রাপ্ত টাকার একটা অংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে ড্রেজার মালিকদের পক্ষ থেকে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুটিকাটা গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, শুধু খুটিকাটা নয়, আমাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। এ বিষয়ে কথা বললে প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়তে হয়। তাই ক্ষতি হলেও মুখ বুঝে সহ্য করতে হয় আমাদের। বালু উত্তোলনকারী ও ড্রেজার মেশিনের মালিক বলেন, সবাই উত্তোলন করে তাই আমিও মেশিন বানিয়েছি। চুক্তি করে বালু উত্তোলন করছি। সামান্য লাভ হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার ফোন দিয়েছিল বন্ধ করে দিয়েছি।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আক্তার হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিদ্ধুদ্ধে প্রচলিত আইনে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযান চালিয়ে ভুগর্ভস্থ বালু উত্তোলনকারীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।