খুলনা : খুলনা পাবলিক কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন (১৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফাহিম ইসলাম মনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার খুলনার শিশু আদালতে ফাহিম আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে ফাহিম। আদালতের বিচারক মোসাম্মাৎ দিলরুবা সুলতানা তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিশু শোধনাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ফাহিম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক ছিলো ফাহিম। সে মুজগুন্নী অবাসিক এলাকার মো. ফারুক হোসেনের ছেলে।
গত ২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে খুলনার পাবলিক কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থলের পাশেই ছুরিকাঘাত করে পাবলিক কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন (১৪) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রাজিনের বাবা শেখ জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে খালিশপুর থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে নগরীর মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও সেনা সদস্য আলমগীর হোসেনের ছেলে আসিফ প্রান্ত আলিফ (১৬), নগরীর বড় বয়রা মেইন রোডস্থ আফজালের মোড় এলাকার জাকির হোসেন খানের ছেলে মো. জিসান খান ওরফে জিসান পারভেজ (১৬), বড় বয়রা মেইন রোড এলাকার মো. আহাদ হোসেনের ছেলে তারিন হাসান ওরফে রিজভী (১৩), রায়েরমহল মুন্সিবাড়ির চিনির ভাড়াটিয়া সাইদ ইসলামের ছেলে মো. সানি ইসলাম ওরফে আপন (১৩), বড় বয়রা সবুরের মোড় এলাকার লিয়াকত হোসেনের ছেলে রয়েল (১৪) এবং মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও মোংলা থানার এসআই ওহিদুর রহমানের ছেলে শাহিনুর রহমান ওরফে সাগর (১৩) ও নগরীর ছোট বয়রা শ্মশান ঘাট এলাকার জাকির হাওলাদারের ছেলে মো. মঞ্জুরুল ইসলাম সাব্বির হাওলাদার (১৭)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েল ও মিতুল কোনও জবানবন্দি দেয়নি। সাব্বিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত ২২ জানুয়ারি বিকালে তার বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালিশপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, জবানবন্দিতে আসামীরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, এক সহপাঠীকে আলিফ প্রেম নিবেদনসহ উত্ত্যক্ত করতো। কিন্তু রাজিন বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। সে অনুযায়ী ২০ জানুয়ারি রাতে পাবলিক কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে তাকে মারধর করা হয়। এ সময় রাজিনের বুকে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় সাব্বির। আর অন্যরা তাকে কিলঘুষি মারে। ছুরির আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণেই রাজিনের মৃত্যু হয়।