মৃত্যুর কাছে হার মানলো অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত

প্রকাশঃ ২০১৯-০৪-১১ - ১১:২৯

ঢাকা অফিস : ফেনীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত মারা গেছেন। বুধবার রাত, সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্তলাল সেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, ‘নুসরাতকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শরীরের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রোগীকে বাঁচানো খুবই কষ্টকর।’

নুসরাতের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, সকাল ৮টায় নুসরাতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত পাঁচ দিন ধরে নুসরাত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়ার কথা থাকলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া সম্ভব হয়নি।

ফেনীর সোনাগাজীতে ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। এরপর, অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু, শরীরের সত্তর শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গেল ৬ই এপ্রিল সকালে সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে, নুসরাত জাহান রাফিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ছাদে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে বলা হয়।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গেল ২৭শে মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাত জাহান রাফির মা। মামলার এজহারে বলা হয়, ২৭শে মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষা তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে নুসরাতকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধাঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে, পরিবারের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা।’

শ্লীলতাহানির অভিযোগে করা ওই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার লোকজন মামলা ও অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য চাপ দেয়। পরে, নুসরাত মামলা তুলে নিয়ে অস্বীকৃতি জানালে মুখোশ পরা লোকজন তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।