খুলনা : খুলনায় বখাটে পাইপ মিস্ত্রি শুভ‘র উৎপাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলো সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বখাটের উৎপাত সইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে শামসুন নাহার চাঁদনী (১২) নামের ওই ছাত্রী। সে খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। শুক্রবার রাতে মহানগরীর হরিণটানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিজ বাড়িতে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। পুলিশ চাঁদনীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। চাঁদনীর বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট রবিউল ইসলাম। বখাটের উৎপাতে চাঁদনীর আত্মহত্যার ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। নিহতের বাবা রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, শুভ নামের একটি বখাটে ছেলে চাঁদনীকে উৎপাত করতো। এই ঘটনা জানার পর গত শনিবার আমি শুভ’র মা-বাবাকে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার শুভ ও শুভ’র মা আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে অপমান করেন। তিনি চাদনীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। চাঁদনী আমার অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে। এ বিষয়ে মামলা করবেন বলে জানান তিনি। চাঁদনীর মা ফিরোজা বেগম অভিযোগ করেন, এর আগেও শুভ আরেকটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে সালিসও হয়েছে। তারপরও শুভ এ কাজ থেকে বিরত থাকেনি। এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চাঁদনীর বাবা হরিণটানা প্রাইমারি স্কুলের সামনে জায়গা কিনে বাড়ি করে গত কয়েক বছর ধরে পরিবারসহ বাস করছেন। তাদের প্রতিবেশি সেনিটারি মিস্ত্রি শাহ আলমের ছেলে শুভ। সে পাইপ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করে। শুভ চাঁদনীকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করতো। শুক্রবার বিকেলে শুভ তার৭/৮জন সহযোগীকে নিয়ে চাঁদনীর বাসায় যায়। এ সময় চাঁদনীর বাবা রবিউলের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয় এবং বখাটে শুভ তাকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে চাঁদনীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। রাতে শুভ দলবলসহ তার মাকে নিয়ে চাঁদনীদের বাসায় যায়। এ ঘটনার পর রাতে চাঁদনী ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার পর বখাটে শুভ ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।