শিশুর পায়ে গুলি-গ্রামে ডুকে নারীকে মারধর
সুনামগঞ্জঃ সাধারণ ব্যবসায়ীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছোড়ায় হতাহতের ঘটনায় সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের তিন সদস্য বিশিষ্ট শনিবার সরজমিনে তাহিরপুর এসে গুলিবিদ্ধ ও হতাহতের স্বাক্ষ্য গ্রহন করলেন। উপজেলার তাহিরপুর থানা সদর বাজারে গত বুধবার নিরীহ পথচারী ও সাধারন ব্যবসায়ীদর ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছোড়ায় হতাহতের ঘটনায় ওই দিন সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।’ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার পুলিশ সুপার তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন। ওই এসআইর বিরুদ্ধে বুধবারের ঘটনা ছাড়াও রয়েছে গণহয়রানী, ঘুষ , দুর্নীতি ও ইয়াবা ব্যবসায়ী, হত্যা ও এসিড মামলার পলাতক আসামীদেও সাথে গভীর সখ্যতা ও ক্ষমতার নানা অপব্যহারের একাধিক অভিযোগ।
জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম অভিযোগে উল্যেখ করেন, দু’ব্যবসায়ীর লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে বুধবার দু’পক্ষের লোকজন পাল্টাপাল্টি মাধধর করার পর তারা উভয় পক্ষ বাজার থেকে চলে যাবার পর ওই দিন দুপুরে তাহিরপুর থানার বির্কিত এসআই রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল কনকন, শ্যামল ও কনস্টেবল কাসেম নিরীহ পথচারী ও সাধারন ব্যবসায়ীদের ওপর অহেতুক পেরোয়া লাঠিচার্জ ও পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা বাঁধা দিতে এলে থানা থেকে ফের অতিরক্তি ফোর্স আনিয়ে রাবার বুলেট ছুঁড়ে এক শিশু , নারী সহ কমপরেক্ষ্য অর্ধশতাধিক লোকজনকে আহত করে জনসমনে আতংক সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে গ্রামের ভেতর ডুকে বাড়িতে থাকা নারীদেরও মারধর করে বাঁধা দিতে এলে সাদা পোষাকে গ্যাঞ্জি পড়া এসআই রফিকুল কোমড় থেকে পিস্তল বের করে গুলি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে তাহিরপুর সার্কেলের এসএসপি কানন কুমার দেবনাথ ও ইনন্সপেক্টও মো. জালাল উদ্দিন বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্য্যন্ত তাহিরপুর সদও বাজার ও গ্রামে গিয়ে হতাহতদেও তালিকা ও ঘটনার সম্পর্কে স্বাক্ষ্য গ্রন করেন। তদন্ত কমিটির নিকট ভোক্তভোগী নারী , শিশু পথচারী ও সাধারন ব্যবসায়ীরা বুধবারের ঘটনায় এসআই রফিকুল, কনস্টেবল কনকন, শ্যামল ও কনস্টেবল কাসেমের পুলিশী ক্ষমতার অপব্যবহার লাঠিচার্জ গুলি বর্ষণের বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করে লিখিত দিয়েছেন।
অভিযোগ কারী শফিকুল ইসলাম শনিবার বলেন, এ ঘটনায় গ্রামের ভেতর বাড়িতে ঢুকে একাধিক নারীকে পিঠিয়ে আহত করে ওই এসআই। শুধু তাই নয় তার বের্বোরিচিত হামলার ঘটনায় ৬ বছরের এক শিশু সহ কমপক্ষ্যে ৫০ লোক হতাহত হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন কী এমন পরিস্থিতি হয়েছিলো যে অহেতুক লোকজনকে লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছোড়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি এমনকি হতাহতের ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্য করতে হল ওই এসআইকে?।
তাহিরপুর উপজেলা আ’লীগ নেতা আলমগীর খোকন অভিযোগ করে বলেন, এসআই রফিকুল গ্রামের ভেতর ডুকে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে এমনকি বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে আমার স্ত্রী বাবলীর ওপর লাঠিচার্জ করে।
সিলেট থেকে বাড়ি ফেরার পথে জুয়েল নামের এক ব্যাক্তিকেও মানসিক বিকারগ্রস্থ এসআই রফিকুল পুলিশী ক্ষমতার জানান দিতে বুধবার সদর বাজার থেকে আটক করে নিয়ে গিয়ে অহেতুক থানা হাজতে আটকে রাখে।’
উপজেলা সদরের অধিকাংশ লোকজন অভিযোগ করে বলেন, এসআই রফিকুল প্রায়ই সিভিল পোষাকে কোমড়ে পিস্তল ঝুলিয়ে অনেকটা ব্যাক্তিগত দাপট দেখাতে ঘুরাফেরা করেন যা পুলিশ বিভাগের ভাবমুর্তি ক্ষুণ করে চলছে।’
তাহিরপুরের কলাগাঁও চারাগাঁও সীমান্তের একাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ীর সাথেও তার রফিকুলের রয়েছে অনৈতিক ও আর্থিক সম্পর্ক যা প্রকাশ্যে এসেছে মাস কয়েক পুর্বে।’ ১’শ পিস ইয়াবা সহ ্ক ব্যবসায়ীকে আটকের পর প্রথমে অস্বীকার ও পরবর্তীতে অর্ধলক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়ে ৮০ পিস ইয়াবা অন্যত্র বিক্রি করে দিয়ে মাত্র ২০ পিস ইয়াবা জব্দ দেখিয়ে একটি মামলা করে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে গোপন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে সখ্যতা রক্ষা করে এই রফিকুল। এসিড মামলা ও মানিক হত্যা মামলার পলাতক আসামীদের সাথে সখ্যতা করে মুর্তি ভাংচুর মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার জন্য দু’ কলেজ ছাত্রকে দু’দফা মারপিট করে জোর পুর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টাও করে রফিকুল। প্রতিপক্ষ্য চাল ব্যবসায়ীদের নিকট মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে অপর তিন নিরীহ চাল ব্যবসায়ীদও কালো বাজারী চাল ব্যবসায়ী বানিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে ওই গুণদল এই রফিকুল ফের ১৫ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে ওই চাল জিম্মায় দিয়ে দেয়। এর আগে উপজেলার লালঘাট গ্রামের এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ১৫ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে আটকের ছেড়ে দেয়া হয়।’
পুলিশের অপর একটি সুত্র জানায়, রাজধানী ঢাকায় চাকুরি করার সুবাধে রাজধানীতে অনেক চুরি ডাকাতি, ছিনতাইকারী গ্রুপ ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতার কারনে শাস্তিমুলক ভাবে এসআই রফিকুলকে ঢাকা থেকে জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় বদলী করার নিয়ম পুলিশ হেডকোয়র্টার থেকে বেঁধে দেয়া হলেও সেক্ষেত্রে রহস্যজনক কারনে চতুর এসআই রফিকুল তদবীর ও মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে অপকের্মের তথ্য গোপন করে ২০১৬ সালে সিলেট রেঞ্জের সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানায় পোষ্টিং নিয়ে ফের পুরনো ষ্টাইলে তাহিরপর থানায় ঘুষ দুর্নীতি ও মিথ্যা মামলায় গণহয়রানরী করে নিজের টাকার পাহাড় গড়ে তুলতে পুলিশী ক্ষমতার অপব্যবহার দেখাতে বার বার মরিয়া হয়ে উঠে এসআই রফিকুল।’
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মো. হাবিবুল্লাহ শনিবার বিকেলে তদন্ত শেষে গণমাধ্যমকে জানান, তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে লোকজন ও হতাহতদের নিকট থেকে লিখিত স্বাক্ষ্য নিয়েছি, পুলিশ সুপার মহোদায়ের নিকট তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর তিনিই সিদ্ধান্ত নিবেন পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে ।