প্রলয় চৌধুরী মুক্তি,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জামাত-শিবির সকাল বেলা তখনো কাটেনি মানুষের ঘুমের ঘোর, দোকানপাটও খুলেনি, আর তখনই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নগরীতে ঝটিকা মিছিল করেছে ছাত্রশিবির।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দীর্ঘ ১ বছর পর এ মিছিল বের করল সংগঠনটি।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় নগরীর ডিটি রোড আবুল বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিলটি পাহাড়তলী বাজার মোড়ে গিয়ে হয়।
মিছিলের পরে সংগঠনটির পক্ষ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভারও আয়োজন করতে দেখা যায়।
এই আলোচনা সভায় এক নেতা বলেন- ‘আপনারা এসেছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ, আজ আমরা কোন ধরনের উশৃঙ্খলতা করব না, শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা আমাদের অনুষ্ঠান শেষ করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে মিছিল নিয়ে আসার অল্প মুহূর্ত পরই একটা সমাবেশ করে তারা। ১০ মিনিটেরও কম স্থায়ীত্ব ছিল সমাবেশের মেয়াদ। সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।
এ ব্যাপারে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হাসান ইমাম গণমাধ্যমকে বলেন- ‘ছাত্রশিবির মিছিল করার জন্য জড়ো হয়েছে শুনে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছি। কিন্তু এর আগেই তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। পরে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেন মুন্না নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার বাড়ি পতেঙ্গা, কাটগড়।’
১৯৭১ এর পূর্বে জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংস্থার নাম ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ। ১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শিবির প্রতিষ্ঠিত হয়।
৭১ এ যুদ্ধাপরাধের সঙ্গেও ছিলো এই শিবিরের সম্পর্ক। সেসময় সংগঠনটি ছাত্রসংঘ নামে স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরে ইসলামী ছাত্র-শিবির নাম নিয়ে এই দলটি বাংলাদেশ জুড়ে সহিংসতার রাজনীতি ছড়িয়েছে।
২০১৩ সালের গোড়ার দিকে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ হওয়ার পর থেকেই সহিংস রূপ দেখাতে শুরু করে শিবির।
যুদ্ধাপরাধের রায় ঘোষণা এবং কাদের মোল্লার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালে প্রতিদিনই তাদের হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সাধারণ মানুষ। গত এক বছরে তাদের সহিংস হামলায় নিহত হয় অসংখ্য মানুষ।
শিবির পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে, পুলিশের মাথা ইট দিয়ে থেতলে দিয়ে, গায়ে আগুন জ্বালিয়ে হত্যার অভিযোগও রয়েছে শিবিরের বিরুদ্ধে।