টাঙ্গাইল : কালো জামা পরা, মাথার জটা চুল ছেড়া কাপড় দিয়ে বাঁধা, মুখে অদ্ভুত ধরনের মুখোশ। এলাকায় সবাই যার যার রোগ ও সমস্যা সমাধানের জন্য তার কাছ থেকে ‘বালু পড়া’ নিচ্ছেন। দেদারছে খাচ্ছেনও সেই বালু। বালু পড়া খাওয়ার জন্য রিতিমতো ভীড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলার খানুরবাড়ি এলাকায় ওই নারীর দেখা পাওয়া যায়।
তবে মোবাইলে ছবি তুলতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই এলাকা থেকে চলে যান। বিকেলের পর তাকে আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি।
খানুরবাড়ি গ্রামের গোপাল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘এলাকায় হঠাৎ দেখি অদ্ভুত মুখোশ পরা এক নারী বিভিন্ন জনকে বালু পড়া দিচ্ছেন। এছাড়া রাস্তার মাটিও খাওয়াচ্ছেন। আমি নিজেও প্রথমে তার দেওয়া মাটি হাতে নিয়ে দেখি খুবই সুগন্ধি। পরে তিনি আমাকে বালু পড়ে দিলে সেটা খাই। বালুর স্বাদ মধুর মত মিষ্টি লেগেছে। পরে আমার হাতে থাকা রূপার একটি ব্যাচ তাকে দিয়ে দেই।’
খানুরবাড়ি হালদারপাড়ার দেবেন হালদার বলেন, ‘অন্যদের দেখাদেখি আমিও তারম্ওিয়া বালু পড়া হাতে নেই। খুব চমৎকার একটা গন্ধ বের হচ্ছিল বালু থেকে। পরে বালু খেয়ে দেখি অত্যন্ত মিষ্টি। খুশি হয়ে দুই বারে তাকে ৭০ টাকা দিয়েছি।’
একই গ্রামের আদুরী হালদার বলেন, ‘ছেলে বিশ্বাস হালদারের কয়েকদিন যাবত জ্বর। নিয়মিত ওষুধ খাওয়াচ্ছিলাম। কিন্তু জ্বর ভালো হচ্ছিল না। পাগলের মত দেখতে ওই নারী ছেলেটিকে ঝাড়-ফুঁক দেয়। পরক্ষণেই দেখি জ্বর নেই। তাকে ১০ টাকা দিয়েছি।’
স্থানীয়রা জানান, পাগলের মতো দেখতে অদ্ভুত ওই নারীকে ওই এলাকায় আগে কখনও দেখা যায়নি। কোথা থেকে এসেছেন, কী উদ্দেশ্যে এসেছেন তাও জানা যায়নি। অল্প সময় ছিলেন। তারপর আবার চলেও গেছেন।
টাঙ্গাইলের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজিব পাল চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানে বালু খেয়ে রোগ ভালো হওয়ার কোনো ভিত্তি নেই। বালু বা মাটি খেলে পরবর্তীতে মানুষের পেটের পীড়াসহ বিভিন্নরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কিডনিরও সমস্যা হতে পারে।’