ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, বচিয়াঘাটাঃ খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় মুন ফাউন্ডেশন নামক প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যান নিরাপদ বিশ্বাস কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা। যার রেজিষ্ট্রেশন নং-খুলনা ৮৭/০৪। এলাকার একজন চতুর ফটো ব্যবসায়ীকে চেয়ারম্যান এবং জনৈক প্রভাষ বাকচীকে সদস্য সচিব করে একটি সু-মুঠো কমিটি খাড়া করে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড শুরু করে। মুন ফাউন্ডেশনের পরিচালক বৃন্দরা হলেন প্রদীপ কুমার মন্ডল (রাম দাস), নির্মলেন্দু বিশ্বাস (অধ্যাপক), বোরহান আকতার (দলিল লেখক), মনিমোহন রায় (প্রাক্তন শিক্ষক), প্রিয়ংকা মন্ডল, বিভুতি বাকচী, মীর মাছুদ আলী, সঞ্জয় কুমার মন্ডল সহ ৩১ সদস্য বিশিষ্ঠ কমিটি গঠন করে ২০০৪ সালে মুন ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করে । উল্লেখিত কমিটির মাধ্যমে এলাকার সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ১৫% হারে সুদে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাছাড়া এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীদের কে মোটা অংকের ঋণ প্রদাণের কথা বলে প্রায় ১০ বছরে কোটি কোটি টাকা সঞ্চয় গ্রহণ করেন। এই টাকা গ্রহণের সময় গ্রাহকের প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ফরম সহ ৩০০/- টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করে। এসব চুক্তিপত্রে চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন পরিচালকদের স্বাক্ষর সহ সংশ্লিষ্ট পদবীর সীল যুক্ত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নিরাপদ বিশ্বাস, পরিচালক ও কর্মীবৃন্দের মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট হতে টাকা লেনদেন করত বলে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এমনকি কর্মীরা চেয়ারম্যান এবং পরিচালকদের কথা মত বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও চাকরীজীবীদের নিকট হতে ১৫% সুদের বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন এই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এসব টাকা প্রতিষ্ঠান থেকে উধাও হয়ে গেছে বলে জানা যায়। দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান নিরাপদ বিশ্বাসকেও এলাকায় দেখা যায় না। এমনকি পরিচালকরা বলেন চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠানের টাকা নিয়ে রাতারাতি পালিয়ে গেছে। তবে এ ব্যাপারে এলাকার সুধী মহলের বক্তব্য একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থ চেয়ারম্যানের একার পক্ষে আত্মসাৎ করা সম্ভব নয়। এরসাথে পরিচালকবৃন্দ অবশ্যই জড়িত। তারা হয়তো চেয়ারম্যানকে কিছু দিনের জন্য গোপন করে রেখেছে। দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানের তালা ঝুলতে দেখা যায়। এলাকার মানুষের চাপের মুখে পড়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। তারা কোন পথ না পেয়ে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শোভা মন্ডল, আনন্দ ঢালী, কাকলী রায়, কার্ত্তিক মল্লিক, সুকৃতি মন্ডল, রানু খাতুন, শান্তনা সাহা, নিয়াজ মোর্শেদ, রূপা রায়, বন্দনা, চায়না, মিনু মল্লিক, লিপিকা মন্ডল, সেলিম, নিত্যানন্দ, তপন কুমার, মুন ফাউন্ডেশন কর্মরত ব্যক্তিরা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সহ পরিচালকদের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা চেয়ারম্যানের দপ্তরে। যার কেস নং-৬২/১৭ অনুযায়ী বিবাদীদের নোটিশ করা হলে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হয়ে সময়ের প্রার্থনা করেন। অথচ তার এক সপ্তাহ পরে মুন ফাউন্ডেশনের অফিস খোলা দেখা যায়। এ ব্যাপারী প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক বোরহান আকতার বলেন চেয়ারম্যান নিরাপদ একাই অর্থ লেনদেন করত। সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নবাগত নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী এ প্রতিবেদকে জানান মুন ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সম্প্রতি আমি জেনেছি। তবে এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও দুদকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।