সুইসাইড নোটে ঋণের কথা লিখে বিমান বাহিনীর (অবঃ) কর্মকর্তার আত্মহত্যা

প্রকাশঃ ২০২৪-০৯-২০ - ২৩:৫৫

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা থেকে// সুদের জাল থেকে মুক্তি পেতে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বাংলাদেশ
বিমান বাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) আব্দুল জব্বার (৫৬)। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার বিকালে খুলনার ফুলতলা বেজেরডাঙ্গা ট্রেন স্টেশনের মধ্যবর্তী মুক্তেশ্বরী রেলগেট এলাকায়। তিনি যশোরের নতুন খয়েরতলা এলাকার বাসিন্দা হলেও তার পৈত্রিক বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বরুনা গ্রামের। তিনি ওই গ্রামের মৃতঃ ইমান আলী ফকিরের পুত্র।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বেলা আনুমানিক ২টা থেকে ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) আব্দুল জব্বার মুক্তিশ্বরী রেলগেট এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই এলাকা অতিক্রমের সময় আত্মহত্যার জন্য তিনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। সাথে সাথেই তারকোমর থেকে শরীর দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। লাশের পাশে পড়ে থাকা তার ফাইলে ভোটার আইডি কার্ড ও নিজ হাতে লেখা সুইসাইড নোট পুলিশ উদ্ধার করে। প্রাথমিক ও জুনিয়রে বৃত্তিপ্রাপ্ত, ১৯৮৩ সালে এসএসসিতে ও ১৯৮৫ সালে এইচএসসিতে স্টার মার্কস এবং বিএ (পাশ) কোর্সে ৮ম ষ্টান্ড করা মেধাবী আব্দুল জব্বার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। চাকুরীর সুবাদে ১৫ টি দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও ভ্রমন করেন। বিমান বাহিনীর ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে প্রমোশন নিয়ে অবসরে গিয়ে যশোরের ২০০৪/০১ নতুন খায়েরতলা এলাকায় বসবাস শুরু করেন। ব্যাক্তি জীবনে তার মানসিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী, প্রতিবন্ধী কন্যা ও অপর কন্যা সানজিদা চাকুরীরত। যশোর জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার ও পৌর সভার প্রশাসক বরাবর লিখিত সুইসাইড নোটে তার আত্মহত্যার মুল কারণ হিসাবে ঋণ ও সুদের জালে জর্জরিত বলে উল্লেখ করেন। ৯ ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে মাসিক ৪০ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। তার এই মৃত্যুর জন্য অন্য কেউ দায়ি নয় বলে উল্লেখ করেন। সন্ধ্যায় জিআরপি থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা (নং-২৯) হয়েছে।