খুলনায় মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

প্রকাশঃ ২০২৪-০৯-২৯ - ১৭:০১

বিজ্ঞপ্তি : বানোয়াট মামলার ফরমায়েশি সাজা মাথায় নিয়ে কারাবন্দী দৈনিক আমার দেশ’র মজলুম সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন খুলনার সাংবাদিক সমাজ। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা ও আমার দেশ পরিবারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। দুপুর সোয়া ২ টায় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক এই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর প্রাণকেন্দ্র পিকচার প্যালেস মোড় প্রদক্ষিণ করে। এরপর প্রেসক্লাবের সম্মুখে সমাবেশে মিলিত হয়।
এমইউজে খুলনার সভাপতি মো. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানার পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন। বক্তৃতা করেন বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি মো. রাশিদুল ইসলাম, সাবেক নির্বাহী সদস্য শেখ দিদারুল আলম ও এইচ এম আলাউদ্দিন, ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হিমালয়, দৈনিক খুলনাঞ্চল সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলটন, খুলনা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম নূর, সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট গ্রুপ (এনআইজি) এর খুলনার সদস্য সচিব এডভোকেট শাহ আলম ও খুলনা সদর থানা বিএনপির আহবায়ক কে এম হুমায়ুন কবীর। কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতা হারুন অর রশীদ, আবুল হাসান শেখ, মাশরুর মোর্শেদ, কামরুল হোসেন মনি, সেলিম গাজী, বশির হোসেন, ইয়াসিন আরাফাত রুমি, এম এ আজিম, রানা কবীর, মানজারুল ইসলাম, আমির হামজা, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মোড়ল, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বাবু, সেচ্ছাসেবক দল নেতা শফিকুল ইসলাম শাহিন, কামাল হোসেন, মিলন, মিরাজ, রবি, রাজুসহ বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও চক্রান্ত ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। আধিপত্যবাদী ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই মাটি থেকে ভারতীয় আগ্রাসনের শেকড় উপড়াতে ও লুটেরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মাদের কবর রচনা করতে সাহসী কলমযোদ্ধা মাহমুদুর রহমানকে কারামুক্ত করার এবং আমার দেশ চালু করে জনগণের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কোন বিকল্প নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে বিগত সরকার একই ভাবে বানোয়াট মামলা দিয়ে সাজাও দিয়েছিল। তার সকল মামলা প্রত্যাহার ও সাজা বাতিল করা হয়েছে। তাহলে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান যায়যায়দিন সম্পাদনা শফিক রেহমান সহ আর যাদের বিরুদ্ধে এমন মামলা ও সাজা আছে সেগুলো কেন প্রত্যাহার হবেনা।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে জনগণের আন্দোলন ও রক্তদানের ফসল দাবি করে বক্তারা বলেন, পাবলিক সেন্টিমেন্ট বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হঠকারী যে কোন কাজ জাতির মধ্যে অনৈক্য আনবে ও বিভেদ তৈরি করবে।
সমাবেশ থেকে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১২৪ মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি আদালতের দেয়া সাজা বাতিল, আমার দেশ চালুর সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং বন্ধ হওয়ার পরে গত ১১ বছরের সকল ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয়।
পতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা পরিকল্পনার কল্পিত বানোয়াট অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত বছরের আগস্টে ৭ বছরের সাজা হয় সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের।
উল্লেখ্য, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার সাজানো মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজাপ্রাপ্ত দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে আত্মসমর্পণ করতে আদালতে যান । এ সময় তার পক্ষে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেয়ার আদেশ দেন আদালত। সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ ৫ জনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন।