খুলনায় ব্যবসায়ী জাকির হত্যায় ১১ বছর পর দুজনের যাবজ্জীবন

প্রকাশঃ ২০২৪-০৮-২২ - ১৮:০৫

খুলনা প্রতিনিধি: খুলনায় ব্যবসায়ী জাকির হত্যার দায়ে ১১ বছর পর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ ক্ষতিপূরণ বাবদ নিহতের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপর ৩ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই অ্যাদলতের বেঞ্চ সহকারী গনেশ কুমার দাস।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, দৌলতপুরের বাসিন্দা সাবেক বিএনপি নেতা মরহুম শেখ মনিরুল ইসলামের ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা শেখ তানভির ইসলাম ইমু এবং সোনাডাঙ্গা থানার আন্দিরঘাট এলাকার বাসিন্দা শামসু শেখের ছেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা মিঠু। এছাড়া এ মামলায় খালাস পেয়েছেন রায়ের মহল এলাকার বাসিন্দা আ. ছাত্তার মুন্সির ছেলে মো. আরেফিন মুন্সি এবং একই এলাকার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ নুরুর ছেলে আবুল কলাম আজাদ ওরফে ডিবি কালাম ও আ. ওহাব শেখের ছেলে মিরাজ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম ও মামলার আসামিরা একই এলাকার বাসিন্দা। তারা ওই এলাকায় চুরি, ছিনতাই ডাকাতি ও মাদক ব্যাবসার সাথে জড়িত ছিল। এলাকায় অবৈধ কাজের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। জাকির খুন হওয়ার কয়েকমাস আগে, সে মিঠু কে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে জাকিরকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে মিঠু। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন তানভির ইসলাম ইমুর মাধ্যমে মাদক ক্রয়ের কথা বলে ভিকটিমকে ডেকে নেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১ টার দিকে জাকিরকে জোড়াগেট নাদিয়া অটোমোবাইলসের দোকানের সামনে দেখা মাত্র মিঠু ও তার সহযোগিরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আত্মরক্ষার্থে জাকির নাদিয়া অটোমোবাইলসের ওই দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সন্ত্রাসীরা ওই দোকানের ভেতর গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় নিহত জাকিরের চাচা বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৭ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে ১২ জন আসামিকে বাদ দিয়ে ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার এসআই আলতাফ হোসেন ৫ জনকে আসামি করে আদলতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ ঘটনার ১১ বছর পর আজ রায় ঘোষণা করা হল।