খুলনার ডুমুরিয়ায় সালিসের নামে  ইউপি চেয়ারম্যানের গনজমায়েত

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-২০ - ১৮:৩০

খুলনা অফিস : খুলনার ডুমুরিয়ায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং অধিক মানুষের জমায়েত না করার সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. প্রতাপ কুমার রায় বিচার-সালিশের নামে প্রতিনিয়ত এলাকায় ব্যাপকহারে জনসমাগম ও মানুষের জমায়েত করে চলেছেন। সবশেষ রবিবার আটলিয়া ইউনিয়েনের কুলটিয়া স্কুল মাঠে মাছ চোরের সালিশ বৈঠকের নামে শত শত মানুষের জমায়েত করেছেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি মেম্বর আব্দুল হালিমসহ এলাকার গন্যমান ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনের পর দিন এ ধরনের হাজারো লোকের জমায়েত ও জনসমাগম করায় মহামারী করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমনের চরম আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। স্তানীয় ইউপি চেয়ারমান ও ইউনিয়ন করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রতাপ কুমার রায় ও ইউপি মেম্বর আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে এ ধরনের গনজমায়েতের আয়োজনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের  কাছে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানায়, মহামারী নোবেল করনা ভাইরাস নিয়ে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সমগ্র দেশের মানুষ উৎকন্ঠিত। করোনা নিয়ন্ত্রনে সভাসমাবেশ ও গনজমায়েত বন্ধ এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনসহ সবাই চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের সকল পর্যায় থেকে মানুষকে ঘরে অবস্থান করা এবং দেশের মসজিদ মন্দির সহ সকল উপাসনালয়ে যখন লোকজনের উপস্থিতি সীমিত করা হয়েছে। তখন গত শনিবার সন্ধ্যায় ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউনিয়নের কুলটিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের মৎস্য ঘের থেকে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সালিশের নামে কুলটিয়া প্রাইমারী স্কুল মাঠে সালিশী বৈঠক বসায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. প্রতাপ কুমার রায়। সেখানে স্থানীয় মেম্বর আব্দুল হালিমসহ কয়েক শত মানুষ উপস্থিত করা হয়। করোনা প্রতিরোধে কোন প্রকার নিয়ম কানুন ও সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে শত শত লোকের সমাগম করায় এলাকাবাসীর মধ্যে করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমনের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জড়িতদেরকে আইননের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. প্রতাপ কুমার রায় জানান, তিনি একটি মাছ চুরির ঘটনার কথা শুনে সেখানে যান। কিন্তু তারপেরই অনেক লোক সেখানে জড়ো হয়ে চুরির ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবী জানালে তিনি সেখানে সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে সবাইকে আশ্বস্থ করলে এলাকাবাসী শান্ত হয়। তবে তিনি ফৌজদারী অপরাধ বিষয়ে সালিশী করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি এবং সালিশী বৈঠকে শত শত লোক জড়ো করার বিষয়ে তিনি বলেন এলাকার মানুষ স্বউদ্যোগে এসেছে তিনি কাউকে ডেকে আনেনি।

এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম জানান, তিনি সালিশ বৈঠকের বিষয়টি জানতেন না। এছাড়া একজন ইউপি চেয়ারম্যান ফৌজদারী কোন অপরাধের বিচার করতে পারেন না। তবে সোসাল মিডিয়ায় ব্যাপক গনজমায়েতের ছবি ও ঘটনা ভাইরাল হলে খোজ খবর নিয়েছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনকে অবহিত করার পর তার র্নিদেশে সোমবার ঘটনার সাথে জড়িত আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, তিনি ঘটনাটি জানতে পেরে ডুমুরিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে ঘটনা সত্য হলে শোকজ করতে র্নিদেশ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তার জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।