ডুমুরিয়া মাজিদিয়া আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ বানিজ্য- ৩পদে-১৬ লাখ টাকা

প্রকাশঃ ২০২০-০৮-১৭ - ১৮:৪৩

সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া প্রতিনিধিঃ ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ডুমুরিয়া মাজিদিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি শেখ নাজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কর্মচারী নিয়োগে মোটা অংকের অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে উপজেলা সদরের দক্ষিণ প্রান্তে ডুমুরিয়া মাজিদিয়া আলিম মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়। এলাকার মুসল্লী ও শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। সেই থেকে যথেষ্ট সুনামের সাথে মাদ্রসাটি পরিচালিত হলেও হঠাৎ কর্মচারী নিয়োগের ঘটনায় কেলেংকারি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিষ্টানের তিনটি শুন্য পদে অফিস সহকারি, নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া নিয়োগের ঘটনায় উঠেছে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ। তিনটি পদে লেনদেন হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। গত ২৪ জুলাই এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার আগেই গোপনে অফিস সহকারি পদে রুবেল গাজী, নিরাপত্তা প্রহরী পদে আরিফুল ইসলাম ও আয়া পদে মেহেরুন্নেছার সাথে হয়েছে আর্থিক লেনদেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে লিখিত অভিযোগ করেছেন শেখ মোমিন সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহনেওয়াজ বিশ্বাস শিমুল, রফিকুজ্জামান এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডের সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম মোড়ল, ডুমুরিয়া শেখ আব্দুল কাদের ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আব্দুল কাদের, ডুমুরিয়া বড় বাজার ধান ও চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপিত মোঃ আতিয়ার রহমান বিশ্বাস, ডুমুরিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল ঢালী, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী খানসহ ২ শতাধিক ব্যক্তি। তাদের স্বাক্ষরিত ওই অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে পরিক্ষার আগের রাতে পছন্দের প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন পত্র দেয়া হয়েছে। ফলে প্রকৃত মেধাবী প্রার্থীরা এ নিয়োগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া উৎকোচের টাকার একটি অংশ সকল সদস্যকে ভাগ করে দেয়া হয়েছে। একজন সদস্য তার ভাগের টাকা নিয়োগপ্রাপ্ত এক প্রার্থীর বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসা বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ নাজিবুর রহমান। তিনি বলেছেন নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানে কোন প্রকার অর্থ লেনদেন করা হয়নি।
প্রিন্সিপ্যাল মাওঃ বদিউজ্জামান বলেন, প্রশ্নপত্র ডিজি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে করা হয়েছে। রাতে প্রশ্ন দেয়ার কথা সঠিক না এবং আমার সাথে চুক্তির মাধ্যমে ডিজির প্রতিনিধিকে আনা হয়েছে বলে যে কথা উঠেছে এটাও মিথ্যা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেখ ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, মাদ্রাসায় নিয়োগের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। অতি দ্রæত এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, গণস্বাক্ষরিত এ অভিযোগপত্রটি শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান, দূর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।