নগরীর ফুটপাত ফের হকার মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং

প্রকাশঃ ২০১৮-০৩-০৬ - ০২:২৬

আজ থেকে তিন দিনব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান
কামরুল হোসেন মনি, খুলনাঃ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের লক্ষ্যে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফুটপাতগুলো থেকে হকার ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন সময় শহরের রাস্তাঘাট ছিল যানজট ও দখলমুক্ত। এতে নগরবাসী স্বস্তিতে ছিলেন। জনসভা শেষ হতেই পুনরায় ফুটপাতও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। আজ (মঙ্গলবার) থেকেই আবার তিন দিনব্যাপী নগরীর বিভিন্ন ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযানে নামবে কেসিসি।
এ ব্যাপারে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)’র এস্টেট অফিসার মোঃ নূরুজ্জামান তালুকদার সোমবার এ প্রতিবেদককে বলেন, খুলনায় প্রধানমন্ত্রী সফরকালীন উপলক্ষে কয়েকদিন আগে থেকেই নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ফুটপাতগুলো দখল মুক্ত করা হয়। উল্লেখযোগ্য স্পটগুলোর মধ্যে মুজগুন্নী এলাকা, আবু নাসের হাসপাতাল সড়ক, যশোর রোড, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড়, ডাকবাংলো মোড়, শিববাড়ি মোড়, ময়লাপোতা মোড়সহ শহরের বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাতগুলোর দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী কেসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্টেট্রের নেতৃত্বে একটি টিম পুনরায় দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চালাবে।
গত ৩ মার্চ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীতে যত্রতত্রভাবে পার্কিং দূরে থাক, ফুটপাতগুলোতে হকার ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলের কোন চিহ্নই ছিলো না। নগরীর ডাকবাংলো মোড়, শিববাড়ি মোড়, ফুজি কালার মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড়, আবু নাসের হাসপাতাল সড়ক, লোয়ার যশোর রোড, ময়লাপোতা মোড়, কোর্ট চত্বর, পিকচ্যার প্যালেস মোড়, ফেরিঘাট মোড়সহ সড়কের পাশে ফুটপাতগুলো ছিলো দখলমুক্ত। এছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ শপিং মলের সামনে গাড়ি এবং ব্যক্তিগত গাড়ির মূল সড়কের ওপর কোন পার্কিং চোখে পড়েনি। ওই সময় শহরবাসী নির্বিঘেœ চলাচল করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর শেষ হওয়ামাত্রই পুনরায় পূর্বের গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক ও ফুটপাতগুলো হকার ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। ফলে নগরীর যত্রতত্র যানজট সৃষ্টি যেমন হচ্ছে তেমনি ফুটপাত দিয়েও পথচারিদের চলাচলে বিঘœ ঘটছে। শুধু তাই নয় নগরীর এমন কোন সড়ক নেই যেখানে ফুটপাতে হকারের অবস্থান নেই। ফুটপাত দখলে যাওয়ার কারণে মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। রাস্তায় মানুষ চলাচলের কারণে সৃষ্টি হয় যানজট।
শহরের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নাজমুল হুদা বলেন, হকারদের যন্ত্রণায় রাস্তায় চলাফেরা করা যায় না, রাস্তাঘাটে ভ্যান বসিয়ে জটলা তৈরি করে। প্রায়ই দেখি কেসিসি’র পক্ষ থেকে হকারদের উচ্ছেদ অভিযান করা হয়। কিন্তু কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই পুনরায় সেই একই রূপ দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী আসার কারণেই দুই-একদিন সব ফুটপাতগুলো ছিল দখলমুক্ত। জনসভাও শেষ – শুরু এখন দখলের পালা।
অপর স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ কবির হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, কেসিসি’র উচ্ছেদ অভিযানটি শুধু আই ওয়াস ছাড়া কিছুই না। আজ উচ্ছেদ করবে এর ঘন্টাখানেক পরেই পুনরায় দখল হচ্ছে। এতে কিছু অসাধু কর্মকর্তা লাভবান হচ্ছেন। হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সুযোগ পাচ্ছেন। ওই অসাধু কর্মকর্তারাই অভিযানে নামার আগেই তারা ওই সব ফুটপাত দখলকারীদের জানিয়ে দিচ্ছেন। এই অভিযান চালিয়ে কোন লাভ নেই বলে তার মন্তব্য। যারা হকারদের থেকে মাসিক চাঁদা নিয়ে হকারদের আশ্রয় দিত, প্রশাসনের উচিত সেই চাঁদাবাজদের ধরে আইনের আওতায় আনা বলে মনে করেন নগরীর স্থানীয় বাসিন্দারা।