পাইকগাছা : খুলনার দক্ষিণে উপকূলবর্তী জনপদ পাইকগাছা। জলবায়ু ও ভৌগলিক কারণে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার এ অঞ্চলের মানুষ।
সরজমিনে দেখা গেছে, অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে পাইকগাছা শহর রক্ষা বাঁধ। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে শিববাটির আশ্রয়ণ প্রকল্পের ইন্দুকাটা স্থানে ওয়াপদার একাধিক জায়গায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সেভাবেই পড়ে রয়েছে। ভাঙনের জায়গা দিয়ে চুইয়ে চুয়ে নোনা পানি ঢুকছে। বাঁধটি এখনই সংস্কার না করলে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে আবার বিপর্যয়ের ঘটার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভাঙনে এলাকার মানুষকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাত, ২০০৯ সালে ২৫ মে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আইলার জলোচ্ছ্বাসে পৌরসভার দক্ষিণ-পশ্চিমে শিববাটি থেকে বোয়ালিয়া পর্যন্ত একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। ঘরবাড়ি, ফসল ও লিজ ঘের পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসী চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় লোকজন ভাঙনকৃত বাঁধগুলো স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কোনোমতে মেরামত করে রাখে। সেভাবেই অদ্যাবধি সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
ষাটের দশকে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বাঁধে সুদীর্ঘ সময় নিয়মিত মাটির কাজ না হওয়ায় বেশিরভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে নাজুক আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
একইসাথে এই দীর্ঘ পরিক্রমায় এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বিশিষ্ট মানবধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এফএমএ রাজ্জাক বলেন, পাইকগাছার বেশির ভাগ বাঁধ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নিচু ও সরু হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেক স্থানে বাঁধ কেটে নোনা পানি তুলে রাস্তার ক্ষতি করে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জ্ঞাত থাকার পরও সেগুলো সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই এসব বাঁধ সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে তা ভেঙে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পৌরমেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, ১০ বছর ধরে শুনছি বিশ্বব্যাংক ও জাইকা নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবে। উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সভা সেমিনারে বাঁধ নিয়ে বহু কথা বলেছি। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।
তিনি সরকারের কাছে টেকসই বাঁধ নির্মাণে জোর দাবি জানান।